অন্য শ্রমিকদের চেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করেন পোশাকশ্রমিকরা। যে কারণে তারা দ্রুত প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি বেশি আগ্রহী হন।
নারী শ্রমিকরা ডিম, নুডলস, আলুজাতীয় খাবারগুলোই বেশি খেয়ে থাকেন। যা কারখানার আশপাশে ছোট ছোট দোকানে বিক্রি হয়। যেগুলো তৈরি হয় ভেজাল ও বাসি তেল দিয়ে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয় বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
সম্প্রতি রাজধানীতে অনুষ্ঠিত সমন্বিত কৌশল এবং কর্মশক্তি পুষ্টির জন্য সহযোগিতামূলক অ্যাকশন পরিকল্পনা শীর্ষক অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সমীক্ষাটি উপস্থাপন করা হয়। এতে এমন তথ্য উঠে আসছে। কর্মক্ষেত্রে পুষ্টি: চলমান অনুশীলন ও ভবিষ্যৎ নির্দেশনা শীর্ষক গবেষণাটি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য-অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাইফুন নাহিন শিমুল।
এই গবেষণায় পোশাকশিল্পের ম্যানেজার, শ্রমিক, সরকারের সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারসহ ৬২টি সংশ্লিষ্ট গ্রুপের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ- এই কয়েকটি শিল্পাঞ্চলকে নির্বাচন করা হয়। গবেষণা সমীক্ষাটি শুরু ২০২০ সালের আগস্টে, শেষ হয় চলতি বছরের মার্চে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রোভড নিউট্রিশন (গেইন) এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডাব্লিওএফপি) যৌথ উদ্যোগে গঠিত প্ল্যাটফর্ম স্কেলিং আপ নিউট্রিশন (এসইউএন) ও বিজনেস নেটওয়ার্ক (বিএন) বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এই সমীক্ষার উঠে এসেছে, পোশাকশ্রমিকরা সাধারণত ব্যস্ত জীবন পার করেন। এ কারণে তারা দ্রুত প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি বেশি আগ্রহী হন। নারী শ্রমিকরা ডিম, নুডলস, আলুজাতীয় খাবারগুলোই বেশি খেয়ে থাকেন। তা ছাড়া কারখানার আশপাশে ছোট ছোট দোকানে ভেজাল ও বাসি তেলে রান্না ও ভাজা খাবার বেশি বিক্রি হয়। যা বেশির ভাগ পোশাকশ্রমিক বিভিন্ন সময়ে খেয়ে থাকেন। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়।
সমীক্ষায় আরও বলা হয়, পোশাকশিল্পে কর্মরত কর্মীদের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার পাওয়ার অধিকার রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করা জরুরি। তাই ন্যায্যমূল্যের খাবারের দোকান খোলার ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। এতে সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের সরবরাহ বাড়বে। শ্রমিকরা মাসিক আয়ের ১১ থেকে ১৪ শতাংশ সঞ্চয় করতে পারবেন। সঞ্চয়ের পাশাপাশি প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা সময় বাঁচবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম। ছবি: নিউজবাংলা
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ২০০৫ সালের তথ্যসূত্র উল্লেখ করে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, শ্রমিকদের পুষ্টিবিষয়ক উৎপাদনশীলতা ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম। শ্রম বিভাগের মহাপরিচালক গৌতম কুমারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. আল আমিন সরকার, সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।