রাজধানীর কদমতলী থানার মুরাদপুরের হাইস্কুল রোডের একটি বাসা থেকে মধ্যবয়সী এক দম্পতি ও তাদের মেয়ের মরদেহ উদ্ধার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার ওই দম্পতির বড় মেয়ে মেহজাবিন ইসলাম মুনের পর এবার তার স্বামী শফিকুল ইসলাম অরণ্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার তিন দিনের রিমান্ড শেষে শফিকুলকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) জাকির হোসাইন (নিরস্ত্র)।
শফিকুল স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন ওই তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম মইনুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
এর পর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কদমতলী থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মো. শাহিন এ তথ্যটি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
গত ২১ জুন শফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তিন দিনের হেফাজতে পায় পুলিশ।
মামলাটিতে মুন বৃহস্পতিবার চারদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে দোষ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জানা যায়, মেহজাবিনের বাবা মাসুদ রানা ২৬ বছর ধরে সৌদি প্রবাসী ছিলেন। মাঝেমধ্যে তিনি দেশে আসতেন। মাসুদ রানা তার মেয়ে মেহজাবিন ইসলাম মুনকে শফিকুল ইসলাম অরণ্যর সঙ্গে বিয়ে দেন।
এর পর থেকে মেহজাবিন সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য তার মা মৌসুমি ইসলামকে বিভিন্নভাবে চাপ দিতেন।
সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় মেহজাবিন ও তার স্বামী শফিকুল ছয় মাস আগে থেকে মাসুদ রানা, তার স্ত্রী মৌসুমি এবং মেয়ে জান্নাতুল ইসলাম মোহনীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
মাসুদ রানা তিন মাস আগে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন।
মেহজাবিন ও শফিকুল গত ১৮ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাসুদ রানার বাসায় আসেন।
রাত ৯টা থেকে বিভিন্ন সময়ে চা-কফি ও পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে মাসুদ রানা, মৌসুমি ইসলাম এবং মোহনীকে তা খাওয়ানো হয়।
এতে সবাই অচেতন হলে আসামিরা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে একে একে সবার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় মাসুদ রানার বড় ভাই সাখাওয়াত হোসেন মেহজাবিন ও শফিকুলকে আসামি করে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।