ঘুষের ৮০ লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার সিলেট কারা কর্তৃপক্ষের ডিআইজি (সাময়িক বরখাস্ত) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিলের জন্য উচ্চ আদালতে যাবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
তিনি বলেন, পার্থ ডিআইজি প্রিজন হিসেবে থাকা অবস্থায় ৮০ লাখ টাকা তার বাড়িতে পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে টাকাটা অবৈধ বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সেই মামলার বিচারকাজ চলছে। দুইটা সাক্ষীও বোধ হয় হয়ে গেছে।
‘গত বৃহস্পতিবার পার্থর হিয়ারিং হয়েছে এবং তার প্রেক্ষিতে জামিন হয়েছে। আমি মনে করি যে তার জামিনের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নেয়া উচিত এবং জামিনটা যাতে বাতিল করা যায় সেজন্য আমাদের কার্যক্রম চলছে।’
কার্যক্রমটা কীভাবে করবেন জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পার্থর যে জামিন হয়েছে, সেইটা বাতিলের জন্য আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চ্যুয়াল আদালত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার পার্থকে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয়।
২০২০ সালের ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র দেন। ৪ নভেম্বর এই মামলায় চার্জ গঠন করে আদালত। পরে ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
চার্জশিটে বলা হয়, পার্থ বণিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাড়িতে সংরক্ষণ করছেন বলে দুদকের অনুসন্ধান টিম তথ্য পায়। ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই পার্থ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসে অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে পার্থ জানান, তার বাসায় নিজ হেফাজতে ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। তবে অর্থের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
পরে তাৎক্ষণিকভাবে পার্থকে নিয়ে দুদকের অনুসন্ধান টিম ঢাকার কলাবাগান গ্রিন রোডে আবাসিক এলাকায় তার বাসায় অভিযান চালায়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
২০১৯ সালের ২৯ জুলাই পার্থ বণিকের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে ওইদিনই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) পার্থর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলা ও গ্রেপ্তারের পরিপ্রেক্ষিতে একই দিন তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এই মামলার চার্জশিটে ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। মামলার পরই পার্থকে গ্রেপ্তার করা হয়।