মশক নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত এডাল্টিসাইড সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে না দিয়ে তা চুরি করে দোকানে বিক্রির দায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দৈনিক মজুরিভিত্তিক চারজনকে কর্মচ্যুত করা হয়েছে।
চুরি করা সেসব কীটনাশক ক্রয় করা দোকানমালিকের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাও হয়েছে।
ডিএসসিসির অঞ্চল-৫-এর ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের দৈনিক মজুরিভিত্তিক মশককর্মী উজ্জল সিদ্দিকী, সুজন মিয়া, হাফিজুল ইসলাম ও জুয়েল মিয়াকে কর্মচ্যুত করা হয়েছে।
ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামানের সই করা এক দপ্তর আদেশে সোমবার তাদের কর্মচ্যুত করা হয়। ‘যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো’ বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৯ জুন অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সাপ্তাহিক মশক নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য ৭, ৪৫, ৪৬, ৫০, ৫২ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের মশক সুপারভাইজার/তার প্রতিনিধির কাছে ৬ ড্রাম কীটনাশক সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি ড্রামের ধারণক্ষমতা ২০০ লিটার। নিয়মানুযায়ী সেসব কীটনাশক কাউন্সিলর দপ্তরে পৌঁছানোর কথা।
কিন্তু এডাল্টিসাইড সরবরাহের পর কাউন্সিলর কার্যালয়ে পৌঁছে না দিয়ে ৪৬, দক্ষিণ সায়েদাবাদের ‘মেসার্স ভাই ভাই এজেন্সি’ নামের খুচরা জ্বালানি তেল বিক্রেতার দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে- এমন সংবাদে করপোরেশনের মশক সুপারভাইজার মো. মনিরুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক মিজানুর রহমান সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তারা সেখানে ২০০ লিটারের দুটি ড্রাম ভ্যানগাড়ি থেকে নামানো অবস্থায় দেখতে পান।
ইতিমধ্যে আরেকটি ভ্যানগাড়িযোগে ৩০ লিটার ধারণক্ষমতার তিন গ্যালন এডাল্টিসাইড ‘মেসার্স ভাই ভাই এজেন্সি’র ১৩/৬/২, উত্তর-পশ্চিম যাত্রাবাড়ীর শোরুমের সামনে পৌঁছানোর খবর পান এবং সে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
দক্ষিণ সায়েদাবাদের দোকানে উপস্থিত দুই ভ্যানচালককে কোথা থেকে এসব কীটনাশক আনা হয়েছে জানতে চাইলে তারা ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কথা বলেন।
পরে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে যোগাযোগ করে জানা যায়, সরবরাহকৃত কীটনাশক সেখানে পৌঁছায়নি। এর কিছু সময় পরই ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডেও সরবরাহকৃত এডাল্টিসাইড পৌঁছানো হয়নি বলে জানা যায়।
বিষয়টি তৎক্ষণাৎ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, ৪৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু, অঞ্চলের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং সায়েদাবাদ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ সময় তারাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সামনে সেই দোকানের গোডাউন থেকে ২০০ লিটারের দুটি ড্রাম, ৩০ লিটারের আটটি ও ২০ লিটারের একটি গ্যালনসহ মোট ৬৬০ লিটার কীটনাশক জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ওই দোকান ও দোকানের গোডাউন সিলগালা করেন।
করপোরেশনের মশক সুপারভাইজার মো. মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে চুরি করা অবৈধ কীটনাশক ক্রয় করা দোকানমালিক আব্দুল মজিদ সিকদারের বিরুদ্ধে ৯ জুন যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন।