ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়ারেন্টিন সেবাদানকারী ৩০টি আবাসিক হোটেল ৩০ জুনের মধ্যে তাদের বকেয়া ১৭ কোটি টাকা চেয়েছে।
এই পাওনার দাবিতে সোমবার ঢাকা মেডিক্যালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি মানববন্ধন কর্মসূচির করেছে আবাসিক হোটেল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশন।
মানববন্ধনে বলা হয়েছে, ১৭ কোটি টাকা বিল ৩ মাসের, যা ১১ মাসেও পরিশোধ করেনি ঢামেক কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এই বিল পেতে চান হোটেল ৩০টির কর্তৃপক্ষ। মানববন্ধন শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর একটি স্মারকলিপিও দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কো-চেয়ারম্যান খালেদুর রহমান বলেন, করোনা শুরুতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল, সে চুক্তি অনুযায়ী চিকিৎসকেরা হোটেলগুলোতে কোয়ারেন্টিন সেবা নিয়েছিল।
‘চুক্তি অনুযায়ী ৭-১০ দিনের মধ্যে বিল পরিশোধে কথা ছিল। তবে এখন এটি পরিশোধ করা হয়নি। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সুরাহা পাইনি। তাই এক প্রকার নিরুপায় হয়েই এই কর্মসূচি দেয়া।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু ২০২০-২০২১ অর্থ বছর আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাচ্ছে। তাই জুন মাসের মধ্যে আমাদের প্রাপ্য বিল পরিশোধ না হওয়ায় কোয়ারেন্টিন বাবদ বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত চলে যাবে। এই অবস্থায় আমাদের একটায় দাবি ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ করুন।’
খালেদুর রহমান জানান, বকেয়া না পাওয়ায় করোনা মহামারি মধ্যে তাদের হোটেলের কর্মীরাও দীর্ঘদিন বেতনভাতা বন্ধ রয়েছে। বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেকে।
‘সেই সঙ্গে বিল বকেয়া না থাকায় ডেসকো, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থার বিলও আমরা প্ররিশোধ করতে পারছি না। এমন বাস্তবতায় গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের কাছেও একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।’
করোনায় আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে সংক্রমিত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় হাসপাতালগুলো ফাইভ স্টার ও থ্রি মানের হোটেলের ব্যবস্থা করে। অন্যান্য হাসপাতাল হোটেলগুলোর বিল পরিশোধ করলেও ব্যতিক্রম শুধু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ।
বিল এতদিন আটকে কারণ জানতে নিউজবাংলাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, দীর্ঘদিন ধরে হোটেলের বিল আটকে আছে এটা যেমন সত্যি কথা। তেমন সত্যি বিল পরিশোধ নিয়ে ২০২০ সালের নিরীক্ষায় কিছু বিষয়ে আপত্তি এসেছে। এক্ষেত্রে নতুন করে অনুমোদন নিতে হচ্ছে।
‘গত বছরের জুলাইয়ে বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানানো হয়েছে। তবে সেই উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। কীভাবে বিষয়টা দ্রুত সমাধান করা যায় এই বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ের সাথে দফায় দাফায় বৈঠক হচ্ছে। আমার চেষ্টা করে যাচ্ছি যত দ্রুত সম্ভব ওনাদের পাওয়া টাকা মিটিয়ে দিতে।’
বকেয়া বিলের পরিমান আনুমানিক ১৭ কোটি টাকা বলেও স্বীকার করেন মো. নাজমুলও।