ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ঢাকাকে দখল, দূষণ ও দুষ্ট লোকের কবল থেকে মুক্ত করে সবার বাসযোগ্য একটি আধুনিক নগরীতে রূপান্তরিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাফরুলের ইব্রাহীমপুরে অ্যাডভেন্টিস্ট ইন্টারন্যাশনাল মিশন স্কুলে স্থানীয়দের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রাস্তা প্রশস্তকরণ কার্যক্রম পরিদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভাপতির বক্তৃতায় ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর অঞ্চলের ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ড অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। এসব ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট এতটাই অপ্রশস্ত যে, বিপদের সময়ে জরুরি অ্যাম্বুলেন্সও প্রবেশ করতে পারত না। এমনকি এই এলাকার বাড়িঘর থেকে মৃতদেহ বাইরে বের করাটাও খুবই কঠিন ছিল।
তিনি বলেন, প্রশস্ত রাস্তার গুরুত্ব অনুধাবন করেই অত্র এলাকার সাধারণ জনগণ একত্রিত হয়ে ভলান্টিয়ার হিসেবে এগিয়ে আসায় এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এলাকার অপ্রশস্ত রাস্তাগুলো প্রশস্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, এই এলাকার বাড়ির মালিকরা তথা ভলান্টিয়াররা স্বেচ্ছায় মোট ২৭টি রাস্তায় বা রাস্তার অংশসমূহে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করেছেন। এ কাজ করতে গিয়ে অনেককে নিজেদের মূল্যবান স্থাপনার আংশিক ভাঙতে হয়েছে, মূল্যবান জমিও ছাড়তে হয়েছে।
সাধারণ জনগণের অসাধারণ ক্ষমতাবলে স্বেচ্ছায় ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তার প্রশস্ত করার কাজ করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই কাজে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তথা বাংলাদেশ সরকারের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। এসব রাস্তা প্রশস্ত করতে গেলে জমি অধিগ্রহণ করতে হতো, অনেক টাকাও খরচ করতে হতো।
জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এমন মহৎ উদ্যোগের জন্য বাড়ির মালিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, শুধু ডিএনসিসির ৪ নম্বর অঞ্চলই নয়, অন্য সব অঞ্চলের জন্য, এমনকি ঢাকাসহ সারা দেশের জন্যই এটি একটি রোল মডেল, একটি অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, মাটি ও মানুষ বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এই সম্পদকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মন্ত্রী তাজুল এ সময় করোনা মহামারির মধ্যেও জনগণের পাশে থেকে তাদের কল্যাণে কাজ করার জন্য ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতে ২০২০ সালে ঢাকা মহানগরীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩ গুণ হওয়ার কথা থাকলেও ডিএনসিসির সুযোগ্য মেয়রের নেতৃত্বে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় তা মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
তিনি কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও জনকল্যাণকর কাজ অব্যাহত রাখায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানান।
সভা শেষে ডিএনসিসির মেয়র স্থানীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে সাধারণ জনগণের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় প্রশস্ত করা বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখেন।