বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফোনকল সূত্রে ক্লুলেস হত্যার খুনি শনাক্ত

  •    
  • ১৫ জুন, ২০২১ ১৭:৪৭

সাবেক স্বামী সুমির পালিত মা-বাবার ঠিকানা দেন। সুমির পালিত মা আম্বিয়া খাতুনের বাড়িতে গিয়ে ছবি দেখালে তিনি সুমিকে শনাক্ত করেন। আম্বিয়া খাতুনের কাছ থেকে সুমির মোবাইল নম্বর নেয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সুমি জীবিতাবস্থায় সর্বশেষ অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৮ জুন ৩টি নম্বরে কথা বলেন। সেসব নম্বরের লোকেশন খিলগাঁওয়ের নাগদারপাড়া ও শেখের জায়গা। ওই ৩ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

খিলক্ষেত থানার ৩০০ ফিট রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অজ্ঞাতনামা মরদেহের পরিচয় শনাক্ত এবং হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

২০২০ সালের ১৮ জুন রাতে হত্যার শিকার সুমি হাসান। তার মোবাইল ফোনের তিনটি নম্বরের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ফারুকুল ইসলাম, কাজী ইমরান মাহমুদ ও সালাউদ্দিন খলিফা সুমন।

মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির ঢাকা মেট্রো অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৯ জুন ঢাকা খিলক্ষেত থানার পূর্বাচল থেকে ঢাকাগামী ৩০০ ফুট রাস্তার দক্ষিণ পাশের ঝোপের ভেতর থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সিআইডি ক্রাইমসিন টিম এবং টিম-২, ঢাকা মেট্রো উত্তর সিআইডির দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত শুরু করে। সিআইডি ক্রাইমসিন টিম অজ্ঞাতনামা নারীর মরদেহের ছবি, ফিঙ্গার প্রিন্ট ও বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স সংগ্রহ করে। ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই অজ্ঞাতনামা মরদেহের পরিচয় জানা যায়।

অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, অজ্ঞাতনামা ওই নারীর নাম সুমি হাসান। বয়স ৩০। গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার ছিকটিবাড়ীতে তার বাড়ি। তার স্বামীর নাম জাহিদ হাসান। পেশায় ড্রাইভার। ঢাকায় থাকেন।

জাহিদ হাসানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে জানা যায়, ঘটনার সময় তার অবস্থান ছিল জিগাতলা।

‘জিগাতলা থেকে জাহিদ হাসানকে খুঁজে বের করে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি সুমির সাবেক স্বামী। তিনি সুমির পালিত মা-বাবার ঠিকানা দেন। পরে তাকে নিয়ে সুমির পালিত মা আম্বিয়া খাতুনের বাড়িতে গিয়ে ছবি দেখালে তিনি সুমিকে শনাক্ত করেন। এরপর সুমি হত্যার ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা হয়।’

সিআইডি জানায়, আম্বিয়া খাতুনের কাছ থেকে সুমির মোবাইল নম্বর নেয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সুমি জীবিতাবস্থায় সর্বশেষ অর্থাৎ ২০২০ সালের ১৮ জুন ৩টি নম্বরে কথা বলেন। সেসব নম্বরের লোকেশন খিলগাঁওয়ের নাগদারপাড়া ও শেখের জায়গা।

নম্বর ৩টির রেজিস্ট্রেশন পর্যালোচনা করে গ্রাহকের নাম ফারুকুল ইসলাম, কাজী ইমরান মাহমুদ ও সালাউদ্দিন খলিফা সুমন বলে তথ্য মেলে। ফোন কলের তথ্য সূত্র ধরে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার তিনজন সুমির সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, সুমি শারীরিক সম্পর্কের জন্য ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনজনই ৩০ হাজার টাকা নাই বলে দিতে অস্বীকৃতি জানান। টাকা না দিলে ভিকটিম সুমি আসাম ফারুকের স্ত্রীকে সব বলে দেবেনি বলে হুমকি দেন। এরপরই সুমিকে খুনের পরিকল্পনা করেন তারা।

‘তারা পরস্পর যোগসাজশে সুমিকে ২০২০ সালের ১৮ জুন রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে পরদিন সকালে অপরিচিত সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে পূর্বাচল থেকে ঢাকাগামী ৩০০ ফুট রাস্তার পাশের ঝোপে ফেলে যান।’

মামলাটি তদন্তকালে মৃত সুমির ভ্যাজাইনাল সোয়াবের ডিএনএর সঙ্গে আসামিদের ডিএনএর তুলনামূলক পরীক্ষায় বীর্যের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় সুমি হাসানের ভ্যাজাইনাল সোয়াব থেকে যে ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়, সেখানে আসামিদেরও ডিএনএ পাওয়া যায়।

তদন্তকালে প্রাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ, সুরতহাল প্রতিবেদন, আসামিদের ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, আইটি ফরেনসিক রিপোর্ট, ডিএনএ প্রোফাইল রিপোর্ট, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয় গ্রেপ্তার ফারুকুল ইসলাম, কাজী ইমরান মাহমুদ ও সালাউদ্দিন খলিফা অর্থের বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক, শ্বাসরোধে হত্যা ও মরদেহ গুমের চেষ্টা করেন। মামলাটি তদন্ত সমাপ্ত করে তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে বলে জানান শেখ ওমর ফারুক।

গ্রেপ্তারকৃতরা সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে ও আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে পরস্পর যোগসাজশে সুমিকে শ্বাসরোধে হত্যা ও মরদেহ গুমের চেষ্টা করেছিল বলে স্বীকার করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর