গার্ড অব অনার থেকে নারী কর্মকর্তাদের বাদ দেয়া মুক্তিযুদ্ধের চরম অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
বাজেট বক্তৃতায় সোমবার মেনন বলেন, ‘পত্রিকায় পড়লাম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংসদীয় কমিটি নারী কর্মকর্তাদের গার্ড অব অনার থেকে বাদ দেয়ার কথা বলেছেন।
‘যে নারীরা জীবন দিল, ইজ্জত দিল মুক্তিযুদ্ধে, এই সিদ্ধান্ত সেই নারীকে চরম অবমাননা ও অপমান। এটা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘আর তারা কারণ হিসেবে যে ধর্মীয় ফতোয়া দিয়েছেন, তা দেয়ার ক্ষমতা, যোগ্যতা তারা রাখেন না এবং যোগ্যতা তাদের নেই।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীকে বলব, এ বিষয়ে যেন কোনো সিদ্ধান্ত না হয়। এটা হবে মুক্তিযুদ্ধের চরম অবমাননা; মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কাজ।’
সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা প্রশাসন। ডিসি বা ইউএনও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে থাকেন। কফিনে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
অনেক স্থানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে নারী কর্মকর্তারা রয়েছেন। আর সেখানেই আপত্তি তুলেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সংসদীয় কমিটির রোববারের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা ওঠার পর সরকারের কাছে সুপারিশ রাখা হয় গার্ড অব অনার দেয়ার ক্ষেত্রে নারী ইউএনওদের বিকল্প খোঁজার।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার প্রদানের ক্ষেত্রে দিনের বেলায় আয়োজন করা এবং মহিলা ইউএনওর বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।’
কোন যুক্তিতে এই সুপারিশ জানতে চাইলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, নারী ইউএনও গার্ড অব অনার দিতে গেলে স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন।
‘মহিলারা তো জানাজায় থাকতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে মহিলা গার্ড অব অনার দেন, এ রকম একটি ব্যাপার আরকি…।’
শাজাহান খান বলেন, ‘বৈঠকে একটি প্রস্তাব এসেছে। মহিলার বিকল্প একজন পুরুষকে দিয়ে গার্ড অব অনার দেয়ার বিষয়টি এসেছে। আমরা মন্ত্রণালয়কে এটা পরীক্ষা করে দেখতে বলেছি।’
সংসদ ভবনে শাজাহান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির ওই বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কমিটির সদস্য আওয়ামী লীগের রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, রাজিউদ্দিন আহমেদ, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, মোছলেম উদ্দিন আহমদ এবং জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ অংশ নেন।