দক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও জনবান্ধব ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ঘরে বসেই ভূমি মামলার শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন দেশের নাগরিকরা।
প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ও টেকসই ভূমি রাজস্ববিষয়ক বিচারিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই ভূমি-সংক্রান্ত আদালতগুলোর বিচারিক কাজে অনলাইন শুনানি চালু করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে বুধবার অনলাইন শুনানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ের জন্য এটি একটি মাইলফলক। ডিজিটাইজ ওয়ার্ল্ডে ভূমি মন্ত্রণালয় আর পিছিয়ে নেই।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের হয়রানি কমানো, ভোগান্তি কমানোর পাশাপাশি সময় সাশ্রয় নিশ্চিত করা যাবে।’
তিনি বলেন, ভূমির খাজনা আদায়ের প্রক্রিয়াটিও অনলাইনে নিয়ে আসা হচ্ছে।
‘ভূমি কর বা খাজনা পরিশোধে নিবন্ধন করতে নাগরিকদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। আগামী জুলাইয়ে আমরা এটার উদ্বোধন করব।’
ওই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করেন মন্ত্রী।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভূমি সেবা জনগণের মুঠোয় পৌঁছে দিতে কাজ করছি। শিগগিরই কলসেন্টারে ফোন দিয়েও এ সেবা নিশ্চিত করা হবে।’
শুনানিতে যেন সঠিক লোকটি অংশ নেয়, সেই সতর্কতাও নেয়া হয়েছে বলে জানান সচিব।
সারা দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সেটেলমেন্ট অফিস, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও ভূমি আপিল বোর্ডে ভূমি রাজস্ববিষয়ক বিচারিক আদালতের কাজ চলছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব ভূমি রাজস্ববিষয়ক আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অনলাইন শুনানি চালু করা হলে বিচারিক সেবা আরও সহজে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সোমবারের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ (২০২০ সালের ১১ নম্বর আইন) অনুযায়ী দেশের সব ভূমি রাজস্ববিষয়ক আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে বিদ্যমান ব্যবস্থার সঙ্গে অনলাইন শুনানি নিশ্চিত করতে হবে।
এই সেবা তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ছাড়া অবশিষ্ট ৬১ জেলায় শুরু হচ্ছে।
মূলত নামজারি, জমা ভাগ, বিবিধ মামলা, মিস কেস, সেটেলমেন্ট, রেকর্ড সংশোধন, আপত্তি ও আপিলবিষয়ক মামলাগুলো এই সেবার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
যেভাবে হবে অনলাইন শুনানি
সেবাটি পেতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে একজন নাগরিক তার তথ্য দিয়ে অনলাইন শুনানির অনুরোধ জানাতে পারবেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ, মোবাইল ও ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে অনুরোধ জানানোর পর মোবাইল ফোনে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে।
এরপর নাগরিকরা তার মামলার বিস্তারিত দেখতে পারবেন। সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়েই শুনানির অনুরোধ জানাবেন তারা।
শুনানির আবেদন গ্রহণ হলে তা মেইলে আবেদনকারীকে জানানো হবে।
শুনানির দিন একটি জুম লিংক দেয়া হবে। সেই লিংকে ক্লিক করেই অনলাইন শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন আবেদনকারী।