পোলট্রি ফিড মেশিনারিজের কথা বলে ২০১৭ সালে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মদ, সিগারেট ও টেলিভিশন আমদানির হোতা সুরুজ মিয়া ওরফে মো. বিল্লাল হোসেন খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কাস্টমস, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে করা মোট ১৪টি মানি লন্ডারিং মামলার প্রধান আসামি সুরুজ মিয়া। একাধিক অবৈধ আমদানির মাধ্যমে তিনি প্রায় ৫২৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কাস্টমস, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ এ তথ্য জানান।
মো. আব্দুর রউফ বলেন, সুরুজকে সোমবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ দপ্তর থেকে করা ১৪টি মানি লন্ডারিং মামলার আসামি সুরুজ ৫২৫ কোটি টাকা পাচার করেছেন।
অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মেশিনারিজ ঘোষণায় অবৈধ মদ, সিগারেট ও টেলিভিশন আমদানির হোতা এই সুরুজ মিয়া। অনেক চেষ্টার পর তাকে গ্রেপ্তার করা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে একইভাবে অবৈধভাবে আমদানি করা পণ্য চালানের বিপরীতে করা মোট ৩০ মামলার অন্য ১৬টির বিষয়ে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা যায়।
মহাপরিচালক বলেন, তথ্য ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে ১২টি কনটেইনারে পোলট্রি ফিডের ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ঘোষণায় অবৈধ মদ, সিগারেট ও টেলিভিশন খালাস নেয়া হবে। পরে কনটেইনারগুলো কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জব্দ করেন।’
২০১৭ সালের ৫ ও ৬ মার্চ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কনটেইনারে মেশিনারিজের পরিবর্তে বিপুল পরিমাণ সিগারেট, এলইডি টেলিভিশন, ফটোকপিয়ার মেশিন ও অবৈধ মদ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় হেনান আনহুই অ্যাগ্রো এলসি ও অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১৪০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে পল্টন থানায় একই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলা করে কাস্টমস গোয়েন্দা।
গোয়েন্দা অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এর আগে ৭৮টি কনটেইনারে মেশিনারিজ ঘোষণায় পণ্য খালাস নিয়েছে। এই ঘটনায় ৮৭৪ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের অভিযোগে পল্টন থানায় মোট ১৫টি মামলা করা হয়।
দেখা গেছে, চীনের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান একইভাবে একই পণ্য আমদানি করেছে। এই ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে রাজধানীর খিলগাঁও শেখেরটেকের হিব্রো ব্রাঞ্চো সাতটি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে ৩১টি কনটেইনারে মেশিনারিজ ঘোষণায় পণ্য আমদানি করেছে।
তবে হিব্রো ব্রাঞ্চো নামে কোনো আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। এটি কখনও উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করেনি।
তিনি আরও বলেন, হেনান আনহুই অ্যাগ্রো এলসি ও অ্যাগ্রো বিডি অ্যান্ড জেপি নামের দুটি প্রতিষ্ঠান এর আগে যেসব পণ্য আমদানি করেছিল, তাতে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ শুল্ককর ফাঁকি দিয়েছে।
সুরুজ মিয়া হিব্রো ব্রাঞ্চোর স্বত্বাধিকারী। সাতটি চালানে ৩১টি কনটেইনারে প্রায় ২৯১ কোটি টাকা পাচার করায় সুরুজ মিয়াকে এক নম্বর আসামি করে এর আগে মানি লন্ডারিং আইনে পৃথক সাতটি মামলা করা হয়।