বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেয়র আতিকের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ শহীদ পরিবারের

  •    
  • ৮ জুন, ২০২১ ২২:১৬

নুরতাজ আরা ঐশী বলেন, ‘লালমাটিয়ার দুটি ফ্ল্যাট আর সাভারের কলমা গ্রামের বাগানবাড়ি থেকে আমাদের কিছু ইনকাম হতো, যা দিয়ে আমরা পারিবারিক খরচ মেটাতাম। সেই ইনকামটা বন্ধ করে দিয়েছেন মেয়র আতিক। এখন আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের লেখাপড়া বন্ধের পথে।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে একটি শহীদ পরিবার।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনের ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের বস্তিবাসী ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদেরের পরিবারের সদস্য নুরতাজ আরা ঐশী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঐশী অভিযোগ করেন, মেয়র আতিকুল ইসলাম তাদের পিতার পৈত্রিক সম্পত্তি ও বস্তির গরিব মানুষের প্রকল্প জোর করে দখল করেছেন। এছাড়াও পারিবারিকভাবে পাওয়া তার মায়ের দুটি ফ্ল্যাট স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের দিয়ে দখল করেছেন আতিক। পরিবারটির উপার্জনের সমস্ত পথও বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।

ঐশীর অভিযোগ, পুলিশ ও সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে নুরতাজ আরা ঐশী বলেন, ‘আদালত পৈত্রিক সম্পত্তির বিষয়ে আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসন ও ডিএনসিসির সাবেক মেয়র আনিসুল হক আমাদের এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন।

‘মেয়র আতিক আসার পর তিনি সে সমস্যাটিকে জটিল করেছেন। আইন ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের কথা মানছেন না তিনি।’

ঐশী বলেন, ‘ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পে আমাদের কোটি কোটি টাকা আটকে রয়েছে, যা ভূমি মন্ত্রণালয় ও সন্ত্রাসী চক্র লুটেপুটে খাচ্ছে। এদিকে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম আমাদের সাথে বছরের পর বছর অবিচার করছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘লালমাটিয়ার দুটি ফ্ল্যাট আর সাভারের কলমা গ্রামের বাগানবাড়ি থেকে আমাদের কিছু ইনকাম হতো, যা দিয়ে আমরা পারিবারিক খরচ মেটাতাম। সেই ইনকামটা বন্ধ করে দিয়েছেন মেয়র আতিক। এখন আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমাদের লেখাপড়া বন্ধের পথে।’

ঐশী বলেন, ‘আমাদের কোটি কোটি টাকা ভাসানটেক প্রকল্পে ব্লক হয়ে আছে। এর পাশাপাশি গত পঞ্চাশ বছর কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণের আইনি লড়াইয়ে ও অন্যান্য অফিশিয়াল স্টেপ নিতে গিয়ে আরও যা সম্পত্তি ছিল তাও আমরা হারিয়েছি। আমরা সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গিয়ে জাস্টিস পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু সেই রায় যারা বাস্তবায়ন করবেন, তারা সেটাকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আটকে রেখেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ঐশী প্রধানমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও নীতিনির্ধারকদের কাছে ছয় দফা দাবি জানান।

এগুলো হলো-

১। ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা দূর করা। মেয়র আতিকুল ইসলামকে কলমিলতা বাজারের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ পালনে বাধ্য করা।

২। ভূমি মন্ত্রণালয়ের এনএসপি ডিএলের চুক্তির আদেশ প্রত্যাহার করা।

৩। ভাসানটেক প্রকল্প ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে ভূমি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া। এজন্য হাইকোর্টের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করা।

৪। হাইকোর্টের রিট পিটিশন ৭৭৯/২০১০ অবজারভেশন অনুযায়ী সালিশি বোর্ডের মাধ্যমে সমাধান করা।

৫। ভাসানটেক পুনর্বাসন প্রকল্পের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে বন্ধ হওয়া তদন্ত পুনরায় চালু করা। মেয়র আতিকের বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করা।

৬। শহীদ পরিবার হিসেবে নুরতাজ আরা ঐশী ও তার পরিবারের সদস্যদের জানমাল ও সম্পদের সুরক্ষা দেয়া। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবে সরকারি অন্যান্য সুবিধা দেয়া।

ঐশী বলেন, ‘এই বিষয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি এবং ন্যায্য বিচারের দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাশার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রকম কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে এখনও আসেনি। মেয়েটির লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপনি যা বললেন, তাতে এটুকু বলতে পারি এটা তার ব্যক্তিগত আক্রোশ। তার সাথে ডিএনসিসি বা মেয়রের কোনো সম্পর্ক নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বুধবার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বসে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখব।’

ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালে শুরু এ প্রকল্পের দায়িত্বে ছিল নর্থ সাউথ প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট। এরপর ২০১১ সালের ২৭ জানুয়ারি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে এ প্রকল্পের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রায় ৪৮ একর প্রকল্প এলাকায় ১১১টি ভবন ও ১৩ হাজার ২৪৮টি ফ্ল্যাট হওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর