বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে কবি নজরুল সরকারি কলেজে গাছ লাগানোর জন্য অধ্যক্ষের কাছ থেকে আনা টাকার ভাগাভাগি নিয়ে মারামারি হয়েছে কলেজ ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে।
এতে আহত হয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি শিমুল মোল্লা।
রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।
তারা জানান, কলেজে গাছ লাগানোর জন্য টাকা নেয়া হয় অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের কাছ থেকে। এ টাকার ভাগ ভাটোয়ারার সময় এসে উপস্থিত হন সহসভাপতি শিমুল।
শিমুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হলে প্রথমে কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রাকিব আমাকে ফুলের টব দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এ সময় পাশে থাকা সহসভাপতি সজল মজুমদার, উপ পাঠাগার সম্পাদক ইয়াসিন আল অনিক, সহসভাপতি ফারুক হোসেন সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেন সাগর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, সহসভাপতি রিফাত শিমুলকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে আমার মাথা ফেটে গেলে প্রথমে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। এতে মাথায় আটটি সেলাই লাগে।’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, গত দুই বছর ধরে কলেজের আশপাশের ফুটপাত থেকে শুরু করে কলেজের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দিয়ে টাকা আদায় করে আসছেন ছাত্রলীগের নেতারা।
কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক পদ প্রত্যাশী জানান, গত রোজার ঈদে এই সিন্ডিকেট অধ্যক্ষের কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা নিয়েছিল। সে টাকার ভাগ খুঁজতে গেলে সহসভাপতি টুটুল আরেক সহসভাপতি হিমুর উপর হামলা করে কলেজ থেকে বের করে দেয়।
কিছুদিন আগেও কলেজ সাজাতে রং করানোর কাজ পাওয়া ঠিকাদারের কাছ থেকেও টাকা নেয়া হয় জোর করে। সে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়েও ঝামেলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের ঘটনা।
ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য থাকা অবস্থায় শিমুল বলেন, ‘আমি একটি কাজে কলেজে গেছিলাম প্রিন্সিপাল ম্যাডামের কাছে। এতে চাঁদাবাজরা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হামলা করে। প্রথমে আমাকে জহিরুল ইসলাম রাকিব হামলা করে। এরপর চাঁদাবাজির সাথে জড়িতরা সবাই হামলা করে।’
শিমুল যাকে অভিযুক্ত করছেন তাদের একজন কলেজ ছাত্রলীগের উপ-পাঠাগার সম্পাদক ইয়াসিন আল অনিক বলেন, ‘আজ ক্যাম্পাসে একটি মারামারি হয়।’
টাকা ভাগাভাগির বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার সামনেই শিমুলকে রাকিবসহ অন্যান্যরা মেরেছে।’
নিজে জড়িত ছিলেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।
আরেক অভিযুক্ত ফারুক বলেন, ‘হামলা করেছে জহিরুল ইসলাম রাকিব।’
নিজে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগম চাঁদাবাজির কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এমন একটি ঘটনা শুনেছি। একজন ছেলে নাকি আহতও হয়েছে। তবে আমি অফিস থেকে নেমে কাউকে পাইনি। আগামি কাল অফিসে গিয়ে ঘটনা জেনে তদন্ত কমিটি করে দেব।’