ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে হল চালুর দাবিতে অবস্থান নেয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হলে আন্দোলনরত অন্য শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্য এলাকা ছেড়ে চলে যান।
তবে ওই সময় সংঘর্ষ অথবা অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে তারা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেয়। একই সময় ভিন্ন ব্যানার নিয়ে উপস্থিত হন ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতা-কর্মী। ছাত্রলীগের অবস্থান ও গতিবিধি দেখে চলে যেতে বাধ্য হন অন্য শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সাড়ে ১১টায় ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের সামনে ব্যানার টাঙিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তারা সেখানে প্রোগ্রাম করবে বলে জানায়। তারপর আমরা সরে আসি।’
ছাত্রলীগ যে ব্যানার নিয়ে সমাবেশ করতে এসেছিল, তাতে লেখা ছিল, ‘মাদক, সন্ত্রাস ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাবেশ’। আয়োজক হিসেবে দেখানো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
হঠাৎ কর্মসূচি পালন সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে কর্মসূচি তো আর ঘোষণা দিয়ে হবে না। এসব কর্মসূচি যেকোনো সময় করা যায়।’
জিয়া হল ছাত্রলীগের কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘কর্মসূচি পূর্বঘোষিত কি না জানি না। কর্মসূচির আহ্বায়ক ছিলের তানজীন আল আমিন। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।’
ঘটনা সম্পর্কে জানতে এএফ রহমান হল ছাত্রলীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক তানজীন আল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই কর্মসূচি পূর্বঘোষিত ছিল না। আমরা হঠাৎ এসেছি।’
হল খোলার আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটি না; এ রকম কিছু না।’
জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সত্যজিৎ দেব নাথ বলেন, ‘এটি পূর্বঘোষিত কর্মসূচিই ছিল। আপনারা (গণমাধ্যমকর্মী) হয়তো জানেন না।’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমরা তাদের (ছাত্রলীগ) বলি, এটা আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। আমরা স্বল্প সময় কথা বলেই মিছিল নিয়ে চলে যাব। কিন্তু সে বিষয়ে সম্মতি দেননি। উল্টো আমাদের জানান, ‘আমাদের ভিসি স্যারের অনুমতি আছে। আমরা এখনই কর্মসূচি পালন করব।’”
আসিফ জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাজু ভাস্কর্য থেকে সরে যান। এরপর টিএসসির বাইরে অপেক্ষা করেন। ছাত্রলীগ নেতারা কর্মসূচি পালন না করেই দাঁড়িয়ে থাকেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় ছাত্রলীগের মহানগর ও ঢাকা কলেজের নেতাকর্মীরা।
তিনি আরও জানান, ছাত্রলীগ টিএসসির আশেপাশে মোটরবাইক নিয়ে মহড়া দেয়াসহ ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করলে আন্দোলনে অংশ নিতে আসা শিক্ষার্থীরা চলে যান।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মাদকবিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই সুপরিচিত। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক ইবনুল এম হাসান, এএফ রহমান হলের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সাজু, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখার সহসভাপতি তানভীর শিকদার, কর্মী নাবিল হায়দার, বিজয় একাত্তর হলের সহসভাপতি রবিউল হাসান রানা, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখার সহসভাপতি কামাল উদ্দিন রানা।