বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রেকর্ড বৃষ্টিতে আবার ডুবল ঢাকা

  •    
  • ৫ জুন, ২০২১ ১৭:২৪

শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব। ২৬ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টি হওয়ায় নগরীর একটি বড় অংশই তলিয়েছে পানিতে।

অতিবৃষ্টি মানেই ঢাকায় জলাবদ্ধতার যে সমস্যা, তাতে আরও একবার ভুগল নগরবাসী।

শনিবার ভোর থেকে থেমে থেমে আর দুপুরের পর যে ঝুমবৃষ্টি নামে, তাতে আবারও নগরীর বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়ক, অলিগলি তলিয়ে যায়।

জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে কোথাও কোথাও দেখা দেয় দীর্ঘ যানজট।

দুপুরে রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় প্রধান সড়কে দেখা দেয় হাঁটুপানি। ওই এলাকার বাসিন্দা নাহিদা খানম বলেন, ‘এখানে আছি গত সাত বছর ধরে। বৃষ্টি হলেই এভাবে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা এখন নিয়মিতই ঘটছে, যা আগে ঘটত মাঝেমধ্যে।’

খিলক্ষেত এলাকায় কুড়িল ফ্লাইওভারের যে লুপ নেমেছে, সেখানে হাঁটুর বেশি পানি জমে থাকায় দুপুরে গাড়িগুলো নামতেই পারছিল না। যে কারণে প্রধান সড়ক ফাঁকা হলেও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ যানজট বেধে যায়।

পাশে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সড়কেও জমে যায় পানি।

সেখানকার বাসিন্দা আলভী নাভিদ জানান, দুপুরের পর থেকে জি, ডি, এফ, আই, এইচসহ বিভিন্ন ব্লকের প্রধান সড়কগুলো হাঁটুর বেশি পানিতে ডুবে যায়। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকেও এই অবস্থা ছিল।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার চিত্র

বসুন্ধরার গেট থেকে রিকশায় করে বাসায় যাওয়ার সময় বেশ কয়েকটি বাহন উল্টে যেতে দেখেন নাভিদ। জানান, রিকশার পাটাতনেও পানি উঠে গিয়েছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে মোট ১১১ মিলিমিটার। এত বেশি বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের সংগতি নেই নগরের।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের তথ্যমতে, ৮৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হলেই সেটি দ্রুত নিষ্কাশনের মতো অবকাঠামো আছে নগরে।

কিন্তু এর চেয়ে ২৬ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টি হওয়ার কারণে পুরান ঢাকার বংশাল, শেরেবাংলা নগরের সংসদ ভবন এলাকা, আসাদ গেট, মিরপুর-১০, মাজার রোড, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, বাড্ডা লিংক রোড, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা দুপুরের পর পানিতে তলিয়ে যায়।

জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সময় মিরপুর রোডে আরও বেশি জলাবদ্ধতা তৈরি হয়

গত কয়েক বছর ধরেই ভারী বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতা সমার্থক হয়ে গেছে মিরপুরের জন্য। এই বিষয়টি রীতিমতো রসিকতার পর্যায়ে চলে গেছে।

আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মিরপুর-১০সহ বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে চলে যাওয়ার পর ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার ধুম পড়ে যায়।

সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে আসাদ গেট, ধানমন্ডির-২৭ এলাকার সড়কে অনেক পানি জমে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সেই এলাকায় প্রজাপতি পরিবহনের একটি বাস ৪০ মিনিটের মতো দাঁড়িয়ে ঠিক এক স্থানে। কারণ, আসাদ গেটের মোড়ে মিরপুর রোডে পানিতে ডুবে বিকল হয়ে গিয়েছিল। এ কারণে মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো গাড়ি আসাদ গেট পার হতে পারছিল না।

প্রজাপতি পরিবহনের চালকের সহকারী আকবর সোবহান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমনিতে দেহেন যাত্রী নাই। তার ওপরে যে কয়জন আছিল, তারাও নাইমা গেছে গা। ৪০ মিনিট ধইরা গাড়ি এহানেই আছে। বেশ অর্ধেক কেন, আরও ডাবল ভাড়া দিলেও আমাগো পুষাইবনি?’

ফুলবাড়িয়া এলাকায় এভাবে পানি মাড়িয়ে চলতে হয়েছে মানুষকে

জাতীয় সংসদ এলাকায় রাস্তা পার হচ্ছিলেন মধ্যবয়সী একজন। ফুটপাতে দাঁড়িয়েছিলেন রিকশার অপেক্ষায়। কিন্তু আসেনি একটিও। পরে রাস্তা পার হন হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ভিজিয়ে।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই জুতা পরেই পরের দিন অফিসে যাব। তাই চাইছিলাম ভেজাব না। কিন্তু কোনো রিকশা নাই। কী আর করা? তাই এখন ভিজেই গেলাম। এ রকম আর কত দিন চলবে?’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আবুল কালাম মল্লিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।’

এই আবহাওয়াবিদ বৃষ্টির যে পূর্বাভাস দিলেন, তাতে আগামী সপ্তাহে জলাবদ্ধতার এই সমস্যায় নগরবাসীকে আরও বেশি ভুগতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী ৮ জুনের পর থেকে আরও বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

পশ্চিমা লঘুচাপ ও পূবালী বাতাসে গভীর মেঘমালা তৈরি হওয়ায় ঢাকার পাশাপাশি আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ ময়মনসিংহ, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের কোথাও কোথাও অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর