জলাবদ্ধতা, মশার সমস্যা, সড়কবাতি নষ্ট, রাস্তা ভাঙা এবং আরও নানা সমস্যায় ভোগা নগরবাসী ঘরে বসে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই অভিযোগ জানাতে পারবেন নগর কর্তৃপক্ষকে।
এ জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চালু করা ‘সবার ঢাকা’ নামের অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এর পাশাপাশি জরুরি সেবাসংক্রান্ত নম্বর ৩৩৩ এবং দুটি হটলাইন নম্বর ০৯৬০২২২২৩৩৩ ও ০৯৬০২২২২৩৩৪ চালু রয়েছে।
শনিবার রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকায় রাড্ডা এমসিএইচ-এফপি সেন্টারে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্য মেয়র বলেন, “‘সবার ঢাকা’ মোবাইল অ্যাপটি ব্যবহার করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত যেকোনো নাগরিক অতি সহজেই এলাকার রাস্তা, মশক, সড়কবাতি, আবর্জনা, জলাবদ্ধতা, পাবলিক টয়লেট, নর্দমা ও অবৈধ স্থাপনা- এই আটটি বিষয়ে সরাসরি তার মতামত কিংবা অভিযোগ অতি সহজেই ডিএনসিসির কাছে তুলে ধরতে পারেন।”
অ্যাপসটির মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত অভিযোগ দাখিলের পর নাগরিকরা দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ওই সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
জলাবদ্ধতা রাজধানীর নতুন কোনো সমস্যা নয়। মাঝারি বৃষ্টি হলেই প্রায়ই প্রধান সড়ক আর অলিগলি জলমগ্ন হয়ে যায়। শনিবার দুপুরে আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেও এই চিত্র দেখা গেছে।
মেয়র বলেন, ‘নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ডিএনসিসি বিভিন্ন জায়গায় খাল উদ্ধার ও পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করেছে, জনগণের সহায়তায় তা অব্যাহত থাকবে।’
আতিকুলের দাবি, তিনি কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী বলেই ১ জুন ঢাকায় দীর্ঘ সময় ধরে রেকর্ড ৮৫ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টি হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নগরবাসীকে জলজট থেকে মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
মেয়র জানান, এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ১ জুন থেকে চিরুনি অভিযান চলছে। চলবে ১২ জুন পর্যন্ত।
ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন
মেয়র জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে ৫৪টি ওয়ার্ডের ১ হাজার ৯০৫টি কেন্দ্রে একযোগে জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হচ্ছে।
শিশুকে ক্যাপসুল খাইয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেছেন মেয়র আতিকুল
১৯ জুন ২০২১ পর্যন্ত মোট ১৪ দিন এই ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে।
৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (এক লাখ আইইউ) এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (দুই লাখ আইইউ) খাওয়ানো হবে।
ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায় এবং রাতকানা, অন্ধত্বসহ চোখের নানা রোগ দেখা দেয়। এ ছাড়া রক্তশূন্যতা এমনকি শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
তাই শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও দৃষ্টিশক্তির জন্য ভিটামিন ‘এ’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সব অভিভাবককে তাদের শিশুদের ক্যাপসুল খাওয়ানোর ওপর জোর দেন মেয়র।
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জোবায়দুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।