রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় দরিদ্র এক রিকশাচালককে বিনা কারণে মারধর করার অপরাধে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ব্যক্তির নাম মো. সুমন। তিনি ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা।
বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, সুমন কিছু না বলে রিকশায় উঠেই টিপু সুলতান রোডে যাওয়ার জন্য রিকশাচালককে একপ্রকার হুকুম করছেন। রিকশাচালক বৃষ্টিতে ভিজে মাত্রই একজন যাত্রী নিয়ে এসেছেন। তিনি তাই যেতে চাচ্ছিলেন না। যাত্রীকে তিনি অন্য একটি রিকশায় যেতে বলেন। কিন্তু সুমন তার রিকশাতেই যাবেন। এক-দুই কথায় তিনি রিকশাচালককে বিশ্রী ভাষায় গালি দিতে থাকেন এবং একই সঙ্গে নির্বিচারে তার মাথায় ও গালে জোরে জোরে ঘুষি মারতে থাকেন। উপস্থিত দু-একজন এর বিরোধিতা করলেও সুমন তাদের কথা শোনেন না।
এআইজি সোহেল রানা জানান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সংবাদকর্মী আলী আজম বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে জানান। বিষয়টি জানার পরপরই মিডিয়া উইং সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
ঘটনাস্থলটি সূত্রাপুর ও ওয়ারী থানার সীমান্তবর্তী একটি জায়গা। দ্রুততম সময়ে সুমনকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করার জন্য উভয় থানাকেই নির্দেশ দেয় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান এবং সূত্রাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্নেহাশীষ রায়ের প্রচেষ্টায় দুই দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার বিকেলে লালমোহন সাহা স্ট্রিটের একটি বাড়ি থেকে সুমনকে আটক করা হয়।
আটক সুমনের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত ৪ মে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিওলিংক পাঠান একজন সংবাদকর্মী।
ভিডিওতে দেখা যায়, ৪ মে বেলা দেড়টার দিকে বংশালে একজন রিকশাচালকের নাকে-মুখে চড়-থাপ্পড় মারছেন এবং গালিগালাজ করছেন সুলতান আহমেদ নামের স্থানীয় একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। নির্যাতনের একপর্যায়ে রিকশাচালক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ও মূর্ছা যান। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় পরে সুলতানকে গ্রেপ্তার করে বংশাল থানার পুলিশ।
৫ মে সুলতান আহমেদের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। পরে তিন দফায় তার জামিন আবেদন নাকচ করে আদালত।
গত ১৯ মে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু রিকশাচালক আব্দুল হামিদ ওই দিনই সুলতানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করায় তার জামিন আটকে যায়।
পরদিন রিকশাচালকের করা মামলায় সুলতানকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
আবার একই বিষয়ে ভার্চুয়াল আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী শুনানি করে তার জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে তিনি মুক্তি পান।