রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট জালিয়াত চক্রের দুই সদস্যকে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের কোতোয়ালি জোনাল টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়া উদ্দিন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শিশির আলম খান ও মো. মমিনুর রহমান জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ইয়ামিন আরা তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই হেলাল উদ্দিন।
এর আগে গত ৩১ মে সিএমএম আদালতের হাকিম মামুনুর রশীদের আদালতে হাজির করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচ দিনের হেফাজতে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. জিয়া উদ্দিন।
এ সময় রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শিশির আলম খান ও মো. মমিনুর রহমান।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই হেলাল উদ্দিন রিমান্ডের পক্ষে ও জামিনের বিরোধিতা করেন।
শুনানি শেষে বিচারক মামুনুর রশীদ তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন মনির হোসেন ও মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে রুবেল। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি মনিটর, একটি প্রিন্টার, একটি সিপিইউ, একটি কিবোর্ড ও দুটি নকল টেস্ট রিপোর্ট উদ্ধার করা হয়।
গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুর রহমান আজাদ সাংবাদিকদের জানান, গত ৩০ মে বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে বংশাল থানার নাজিম উদ্দিন রোডের আল মেডিকেল ফার্মায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি জোনাল টিম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) যেকোনো অপারেশনের জন্য করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট প্রয়োজন হয়। গ্রেপ্তার দুজন ঢামেকে চিকিৎসারত রোগীদের অপারেশনের জন্য করোনার পজিটিভ রিপোর্ট পরিবর্তন করে নেগেটিভ রিপোর্ট তৈরি করত।’
ক্যানসার আক্রান্ত একজন রোগীর অস্ত্রোপচার করার জন্য দুই হাজার টাকার বিনিময়ে গ্রেপ্তার দুজন একটি করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট তৈরি করে দেন। পরবর্তী সময়ে ঢামেকের নাক, কান, গলা বিভাগে রিপোর্টটি নিয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ সেটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
পরে প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বংশাল থানায় একটি মামলা করে।