ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে মশক নিধনে ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই অভিযানে অভিনেতা অনন্ত জলিলের নির্মাণাধীন এক প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ডিএনসিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে উদয়াচল পার্ক ও খেলার মাঠে ১০ দিনব্যাপী মশক নিধনে চিরুনি অভিযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়।
এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডেই একযোগে শুরু হওয়া এ অভিযানের স্লোগান ‘তিন দিনে এক দিন, জমা পানি ফেলে দিন’।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ হোসেন পরিচালিত মোবাইল কোর্টে এডিস মশার প্রজননস্থল ও লার্ভা পাওয়ায় ইকবাল রোডের ডম-ইনোকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
একই এলাকায় অভিনেতা অনন্ত জলিলের নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ারকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, করোনাকালে যাতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ায় কারও মৃত্যু না হয়, সে জন্যই ডিএনসিসির সব ওয়ার্ডে একযোগে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিজেদের বাসাবাড়িতে ফুলের টব, ছাদ কিংবা অন্য কিছুতে যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নিজেদের ঘরবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে এডিস মশার বংশ বিস্তারকে রোধ করতে হবে।
আতিকুল বলেন, নগরসহ দেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে এ বিষয়ে সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর মেয়র আতিকুল আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাসাবাড়ি পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে যেসব বাসাবাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়, সেগুলোতে স্টিকার লাগিয়ে দেয়া হয়।
এ সময় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, কোনো বাসায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায়সহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া অব্যাহত থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে পরিত্রাণ দিতে ওয়াসা থেকে হস্তান্তরিত খাল ও স্টর্ম স্যুয়ারেজ লাইন পরিষ্কার করা হচ্ছে। করোনা মহামারিকালে স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি খাল ও জলাশয় পরিষ্কার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার রাজধানী ঢাকাকে সবার বাসযোগ্য, সচল ও অত্যাধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ, অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ ও তানভীন সুইটি।