রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ মাদক এলএসডিসহ আটক পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার ঢাকার মুখ্যমহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিচারক পাঁচ দিনের রিমান্ড আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনের পক্ষে এবং আসামিদের জামিন আবেদন বাতিলে শুনানি করেন সিএমএম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দীন হিরন।
রিমান্ড বাতিল চেয়ে আসামি পক্ষে শুনানি করেন মো. আবুল হোসেন ও কামরুল আহমেদ কামাল। আদালতকে তারা বলেন, আসামিরা ষড়যন্ত্রের শিকার। তারা ছাত্র, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। মানবিক বিবেচনায় তাদের রিমান্ড বাতিল করা হোক।
আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি, পুলিশ যা উদ্ধার করে দেখানোর তা তো করেছেন। নতুন করে তাদেরকে আর জিজ্ঞাসাবাদ করার কিছু নাই।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, রামপুরা, বাড্ডা ও ভাটারা এলাকা থেকে রোববার বিকেলে অভিযান চালিয়ে এলএসডি বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে খিলগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল ইসলাম সাইফ, এসএম মনওয়ার আকিব, নাজমুস সাকিব, নাজমুল ইসলাম ও বিএম সিরাজুস সালেকীন। এদের সবাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের কাছ থেকে ২০০০ মাইক্রোগ্রাম এলসডি, আইস ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
পরে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আব্দুল আহাদ জানান, ঢাকায় এলএসডি বিক্রিতে ১৪ থেকে ১৫টি গ্রুপ জড়িত।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর জেরে তার কয়েকজন বন্ধুকে আটকের পর আলোচনায় আসে এই মাদক।
তবে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, ২০১৯ সালেও কানাডাপ্রবাসী দুই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এলএসডি উদ্ধার করা হয়েছিল।
মাদক সেবন করেন এমন ব্যক্তিরা দাবি করছেন, অন্তত চার বছর ধরে বাংলাদেশে এলএসডি পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি চক্র এই নিষিদ্ধ মাদক আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসে।
‘ডার্ক ওয়েব’ ও ‘টেলিগ্রাম’ -এর মতো সিকিউরড সোশ্যাল অ্যাপ ব্যবহার করে বিদেশি বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন বাংলাদেশি ক্রেতা ও ডিলাররা।
এলএসডি মাদক মানুষের মধ্যে বিভ্রম (হেলুসিনেশন) তৈরি করে। এটা সেবন করার পর মস্তিষ্কে হেলুসিনোজেনিক অ্যাফেক্ট তৈরি হয়, যা ব্যক্তির ব্যবহার ও চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বিশেষ করে এটা গ্রহণের পর সাধারণভাবে যে ধরনের রং প্রকৃতিতে দেখা যায়, তার থেকেও বেশি রং দেখতে পাওয়া যায়।