রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ মাদক এলএসডিসহ আটক পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে পেতে চায় পুলিশ।
সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে এই রিমান্ড আবেদন শুনানি হবে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন খিলগাঁও থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল ইসলাম।
রাজধানীর শাহজাহানপুর, রামপুরা, বাড্ডা ও ভাটারা এলাকা থেকে রোববার বিকেলে অভিযান চালিয়ে এলএসডি বিক্রির সঙ্গে জড়িত একটি গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে খিলগাঁও থানা-পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল ইসলাম সাইফ, এসএম মনওয়ার আকিব, নাজমুস সাকিব, নাজমুল ইসলাম ও বিএম সিরাজুস সালেকীন। এদের সবাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের কাছ থেকে ২০০০ মাইক্রোগ্রাম এলসডি, আইস ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
সন্ধ্যায় পল্টন থানায় সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আব্দুল আহাদ জানান, ঢাকায় এলএসডি বিক্রিতে ১৪ থেকে ১৫টি গ্রুপ জড়িত।
গ্রুপগুলো এক বছর ধরে এলএসডি বিক্রি ও সেবন করে আসছিল। অনলাইনে এলএসডি বিক্রি করত তারা।
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আটক ব্যক্তিরা অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আসক্ত হয়। নিজেরা সেবন ও বিক্রি শুরু করে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে তারা এলএসডি দেশে এনে বিক্রি করছিলেন।
মাদক হিসেবে ভয়ংকর এলএসডি, যার পুরো নাম লাইসারজিক অ্যাসিড ডাইথেলামাইড।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমানের মৃত্যুর জেরে তার কয়েকজন বন্ধুকে আটকের পর আলোচনায় আসে এই মাদক।
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বলছে, ২০১৯ সালেও কানাডাপ্রবাসী দুই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এলএসডি উদ্ধার করা হয়েছিল।
মাদক সেবন করেন এমন ব্যক্তিরা দাবি করছেন, অন্তত চার বছর ধরে বাংলাদেশে এলএসডি পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি চক্র এই নিষিদ্ধ মাদক আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসে।
‘ডার্ক ওয়েব’ ও ‘টেলিগ্রাম’-এর মতো সিকিউরড সোশ্যাল অ্যাপ ব্যবহার করে বিদেশি বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন বাংলাদেশি ক্রেতা ও ডিলাররা।
এলএসডি মাদক মানুষের মধ্যে বিভ্রম (হেলুসিনেশন) তৈরি করে। এটা সেবন করার পর মস্তিষ্কে হেলুসিনোজেনিক অ্যাফেক্ট তৈরি হয়, যা ব্যক্তির ব্যবহার ও চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বিশেষ করে এটা গ্রহণের পর সাধারণভাবে যে ধরনের রং প্রকৃতিতে দেখা যায়, তার থেকেও বেশি রং দেখতে পাওয়া যায়।