ভারতের কেরালায় বাংলাদেশি তরুণীকে নৃশংস যৌন নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন তরুণীর বাবা।
ভিডিও দেখে গতকাল বৃহস্পতিবার মেয়েকে শনাক্ত করেন তার বাবা। পরে হাতিরঝিল থানায় করা মামলার এজাহারে ‘উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে আমার মেয়েকে নির্যাতন করেছে, আর আসামিরা আনন্দ করেছে’ বলে উল্লেখ করেছেন নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা।
এর আগে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও দেখে ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ নির্যাতনের ঘটনায় এক বাংলাদেশিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিউজবাংলাকে নির্যাতনের শিকার নারীর বাবার করা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ওই ঘটনায় রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় তরুণীর বাবা মানবপাচার প্রতিরোধ দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন।
নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশি আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
মামলায় নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবা উল্লেখ করেন, আসামি রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়সহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজন পুরুষ ও একজন মহিলা আসামি মিলে তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে হাত, পা ও মুখ চেপে ধরে কিলঘুষি মারেন। একপর্যায়ে তার মেয়েকে যৌন নিপীড়ন করেন আসামিরা।
এজাহারে তিনি লেখেন, ‘এ সময় আমার মেয়ে চিৎকার করেছে, আর আসামিরা উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে আনন্দ করেছে।’
মেয়ের নির্মম পরিণতি ও অজানা শঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মেয়ে কোথায় আছে জানি না। তবে কিছু লোক মারফত শুনতেছি, আমার মেয়ে এখনও ভারতে অবস্থান করতেছে, আসামিদের হেফাজতে আছে।’
মামলার এজাহারে মেয়েটির বাবা জানান, তিনি মগবাজার এলাকার ফুটপাতে জুসের ব্যবসা করেন। তার মেয়ের ছয়-সাত বছর আগে বিয়ে হয়। স্বামী তিন বছর ধরে কুয়েতে থাকেন। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে তার মেয়ে তার ও শ্বশুরবাড়ি দুই জায়গায়ই থাকত।
তিনি আরও জানান, তার মেয়ে ১৫ মাস আগে দুবাই যাওয়ার কথা বললে তিনি নিষেধ করেন। পরে এক বছর ধরে তিনি তার কোনো খোঁজ পাননি। এরপর তিনি জানতে পারেন, মগবাজারের রিফাদুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয় তাকে ফুঁসলিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করেছে।
কিছুদিন আগে জানতে পারেন, তার মেয়ে হৃদয়ের সঙ্গে ভারতে আছে। সম্প্রতি ভিডিওটি দেখে তিনি তার মেয়েকে চিনতে পারেন।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ জানান, তরুণীর বাবা থানায় মামলা করেছেন। এখন তারা তদন্ত শুরু করবেন এবং ভুক্তভোগীকে দেশে ফিরিয়ে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। আসামিদের ভারতের পুলিশের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।