দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার চালু হয়েছে লঞ্চ চলাচল। ঢাকার প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট থেকে সকাল থেকে ছেড়ে গেছে বেশ কয়েকটি লঞ্চ। তবে লঞ্চ ছাড়লেও প্রাণ ফেরেনি ঘাটে। আগের মতো ব্যস্ততা ছিল না লঞ্চ ছাড়ার, শোনা যায়নি বিকট শব্দের সাইরেন আর দেখা যায়নি ঘাটে কুলিদের হাঁকডাক; যাত্রীদের ভিড়।
রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গিয়ে দেয়া যায় ফাঁকা সদরঘাট। নেই যাত্রীদের লঞ্চে ওঠার তাড়া, কিংবা কুলিদের মালামাল বহনের ব্যস্ততা।
লঞ্চের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কর্মচারীরা নানা বিষয়ে গল্প করছেন। যাত্রীদের জন্য প্রস্তুত করছেন লঞ্চ।
মর্নিং সান লঞ্চের ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ অনুসারে আমরা লঞ্চ পরিচালনার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছি। আজ সন্ধ্যা থেকে আমরা যাত্রা শুরু করব। সরকারি নির্দেশ মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়েই যাতায়াত করবে আমাদের লঞ্চগুলো।’
সৌরভ লঞ্চের কর্মকতা ফিরোজ বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করছি না। কেননা টিকিটের মূল্য কেমন হবে, এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কিছুই বলা হয়নি। তাই আমরা সরকারি নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।
‘এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চালুর ক্ষেত্রে আমাদের অর্ধেক যাত্রী নিতে বলা হয়েছিল। তাই ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আমরা পাইনি।’
বরিশাল গমনেচ্ছুক যাত্রী সোহেল পারভেজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিবারসহ বাড়িতে ঈদ করতে পারিনি। তাই পরিবারের সবার জন্য টিকিট কাটতে এসেছি। কিন্তু দাম নির্ধারণ না হওয়ায় টিকিট দিচ্ছে না। এদিকে বরিশাল যেতে ইচ্ছুক যাত্রীরা এরই মধ্যে কিছু কিছু লঞ্চের ডেকে ভিড় করা শুরু করেছেন।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ- বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘লঞ্চে যাতে কেউ অর্ধেকের বেশি যাত্রী নিতে না পারে, সেটা তদারকি করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
‘এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করার জন্য মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। লঞ্চ মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের সহযোগিতায় আমরা যাবতীয় সতর্কতা মেনে চলতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৫টি লঞ্চ সদরঘাট থেকে ছেড়ে গেছে, দুটি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে। তবে দূরের লঞ্চগুলো এখনও আসেনি। এগুলো চাঁদপুরের লঞ্চ। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, হুলারহাটসহ দূরের লঞ্চগুলো এখন আসেনি কিংবা ছেড়েও যায়নি।’
এদিকে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে কয়েক লাখ মানুষ গ্রামে গিয়েছেন। তাদের অনেকেই লঞ্চ চলাচল শুরু হলে আসার অপেক্ষায় আছেন বলেও জানান তিনি।