বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সৌদি ভ্রমণের কঠিন শর্তে ভোগান্তিতে প্রবাসীরা

  •    
  • ২০ মে, ২০২১ ১৯:৫৩

করোনা ঠেকাতে বিদেশি নাগরিকদের সৌদি ভ্রমণে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করে সৌদি সরকার। এ কারণে অনেক যাত্রী টিকেট কেটেও যেতে পারেন নি। ২৪ মে পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধ বিমানের।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশি নাগরিকদের ভ্রমণে কঠিন শর্ত আরোপ করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সৌদি আরব যেতে চাওয়া প্রবাসী কর্মীরা। প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে না পারায় অনেকেরই যাওয়া অনিশ্চিত।

বাংলাদেশ যে দেশগুলো থেকে প্রবাসী আয় অর্জন করে তার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব। দেশটির বিভিন্ন শহরে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। গত অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৪০০ কোটি ৫১ লাখ ডলারের রেমিটেন্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৪৭৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।

সম্প্রতি করোনা ঠেকাতে বিদেশি নাগরিকদের সৌদি ভ্রমণে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করে দেশটির সরকার। এতে বলা হচ্ছে, দেশটিতে ভ্রমণ করতে যাওয়া সব বিদেশি নাগরিককে বাধ্যতামূলকভাবে কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত ইনস্যুরেন্স করতে হবে। এই ইনস্যুরেন্সের আওতায় হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিনের খরচ অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

এ ছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসগুলোকে। দেশটিতে যেতে চাওয়া যাত্রীদের ভ্রমণের প্রথম ও সপ্তম দিন পিসিআর টেস্টের ব্যবস্থাও এয়ারলাইনসকে করতে হবে বলে শর্ত দেয়া হয়েছে।

ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকাও এয়ারলাইনসকে যাত্রার চারদিন আগে দেশটির কর্তৃপক্ষকে জমা দিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে সৌদি আরব। নতুন এ শর্ত কার্যকর হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।

শর্ত পুরণে সকাল থেকেই হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ও কারওয়ান বাজার এলাকায় অবস্থিত সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের অফিসে ভিড় করেন প্রবাসী কর্মীরা।

যারা টিকেট কেটেছিলেন তাদের অনেকেই শর্ত পূরণ না করতে পারায় বৃহস্পতিবার দেশটির পথে উড়াল দিতে পারেননি।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে জেদ্দা যাওয়ার কথা ছিল প্রবাসী কর্মী মেহেরাব হোসেন তুহিনের। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য দেশটিতে হোটেলও বুকিং দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিমানবন্দরে গিয়ে জানতে পারেন নির্ধারিত অ্যাপের মাধ্যমে বুকিং না হলে সৌদি সরকার সেটি গ্রহণ করছে না। এ অবস্থায় সৌদি যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার।

তুহিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণভাবে হোটেল বুকিং দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে সৌদি হলিডে নামের একটি অ্যাপ থেকে বুকিং দিতে হবে। এরই মধ্যে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন জানিও না এ টাকা ফেরত পাব কিনা।

‘সৌদি এয়ার বলছে, তাদের কিছু করার নেই। যে ফ্লাইটে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল, সেটার মোট যাত্রী ছিল ২২৪ জন। এর মধ্য ২০০ জনই নানা কারণে যেতে পারেননি।’

সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের আরেক যাত্রী মো. লিটন মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ফ্লাইট শুক্রবার রাত ১২টায়। গত কয়েকদিন ধরে ঢাকায় পড়ে আছি শুধু হোটেল বুকিংয়ের জন্য। এয়ারলাইনস, ট্রাভেল এজেন্ট কেউই কোনো সমাধান দিতে পারছে না।

‘এয়ারলাইনস বলেছে, আগামীকাল সকাল ১০টায় টাকা নিয়ে তাদের অফিসে যেতে। কত টাকা লাগবে সেটাও জানি না।’

ফ্লাইট বন্ধ থাকায় সৌদি আরব থেকে দেশেও ফিরতে পারছেন না অনেক প্রবাসী। বুধবার রাতে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরার কথা ছিল প্রবাসী কর্মী আরিফুল ইসলাম বাবুর। কিন্তু ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আটকে যায় পরিকল্পনা।

তিনি টেলিফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৬০০ কিলোমিটার দূর থেকে কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে জানতে পারলাম ফ্লাইট বাতিল। ফ্লাইট ধরতে ভোরে বিমানবন্দরে এসেছি। পরে বাধ্য হয়ে কাতার এয়ারওয়েজের টিকিট কেটেছি।’

২৪ মে পর্যন্ত বন্ধ বিমানের সব ফ্লাইট

বিদেশি নাগরিকদের জন্য কঠিন শর্ত আরোপ করায় সৌদি আরবের তিনটি গন্তব্যে আপাতত ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ২৪ মে পর্যন্ত এয়ারলাইনসের সব ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।

বিমানের রুট পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশটির তিনটি গন্তব্যে বর্তমানে ফ্লাইট পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ গন্তব্যগুলো হলো রিয়াদ, দাম্মাম ও জেদ্দা। এই তিন গন্তব্যে সপ্তাহে ১৮ টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।

এর বাহিরেও মক্কা এবং মদিনাতেও রয়েছে বিমানে ফ্লাইট। তবে কোভিড পরিস্থিতিতে আপাতত এ দুই গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে না।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৌদি সরকার আমাদের যে শর্তগুলো দিয়েছে, সেগুলো আমাদের স্টেশনগুলোতে জানিয়ে দিয়েছি। এখন সেখানে আমাদের কর্মকর্তারা চেষ্টা করছেন হোটেল ব্যবস্থাপনা করতে।

‘আমরা চেষ্টা করছি কত কম খরচে এই হোটেলগুলো আমরা পেতে পারি। এগুলো করতে কিছুটা সময় লাগছে। এর বাহিরেও ফ্লাইট শুরুর চারদিন আগে যাত্রী তালিকা দেয়ার একটি শর্ত রয়েছে। সেটির কারণেও ফ্লাইটে সমস্যা হচ্ছে।’

শুধু কাজের জন্য নয় এর বাহিরে হজ ও ওমরাহ করতেও বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি দেশটিতে ভ্রমণ করে থাকেন। ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হলে ভোগান্তি বাড়ে যাত্রীদের।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে এর আগে, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছিল সৌদি আরব। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিল ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফ্লাইট না থাকায় ছুটিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশকে অনিশ্চয়তায় পড়তে হয়। পরে অবশ্য সরকারের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান হয়।

এ বিভাগের আরো খবর