ঈদের পরে রাজধানীর কাঁচাবাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা কম। অনেক দোকানি এখনও দোকানই খুলেন নাই।
তবে বাজারে কাঁচামালের দাম ও সরবরাহ স্বাভাবিক বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা। বরং সবজির দাম ঈদের আগের চেয়েও কিছুটা কমেছে।
তবে গরুর মাংসের দাম এখনও বেশ চড়া।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে সারা বছর অগতির গতি হিসেবে পরিচিত সবজি পেঁপের দাম তুলনামূলক বেশি। বাকি সবজিগুলোর দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমেছে।
খাসির মাংসের দাম একই থাকলেও দাম চড়েছে গরুর মাংসের। ছবি: নিউজবাংলা
রাজধানীর বাজারগুলোতে টমেটো দর এখন ৬০ টাকা। ঈদের আগে ছিল এক কেজি টমেটো কিনতে ক্রেতাকে ৭০-৮০ টাকা গুনতে হয়েছে। পেপে ৬০ টাকা কেজি। করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। শসা ৪০ টাকা। ঈদের আগে বিক্রেতারা এই শসার দাম হাঁকাচ্ছিলেন ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
৬০ টাকা ঢ্যাঁড়স এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। পটলের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
চিচিঙ্গা, ঝিঙা ও ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ঈদের আগে ৬০ টাকার নিচে মেলেনি।
কুমড়া ২০ টাকা কেজি। চালকুমড়া ও লাউ আকার ভেদে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পিস। ধনেপাতা ১৫০ টাকা কেজি। রোজার সময় অবশ্য এই ধনেপাতাও বাজারে কম আগুন ধরায়নি।
এখনও ছুটির আমেজে রাজধানী। বাজারে ক্রেতা কম। ছবি: নিউজবাংলা
দামি সবজি বেগুন এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১২০ টাকা।
রোজার সময় চড়া দামে লেবু কিনতে হলেও এখন হালি ২০ টাকা। গাজর কেজি ১০০ টাকা। বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
ঈদের পরে বাজারে সবজির দাম সম্পর্কে বসিলার বিক্রেতা মো. শাজাহান বলেন, পেঁপে এখন ৬০ টাকা হলেও কয় দিন আগে ৮০ টাকা ছিল। পেঁপের চাহিদা বেশি, এ দিকে মার্কেটে পেঁপে কম। ঈদের কারণে বেচাকেনা কম। মানুষ তো সব বাড়িতে। ঈদের পরে সবজির দাম কমেছে কিছুটা। দাম আরও কমবে কয়েকদিনে মধ্যে।
এদিকে বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা। বড় রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা। আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা। শুকনা মরিচ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। দেশি রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
ঈদের পর সবজির দাম কেমন জানতে চাইলে রামপুরা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী রুহুল আমিন বলেন, ‘এগুলা সব ঈদের আগের মাল। ঈদের পরে কোনো মাল কিনি নাই। শুধু আমি না ঈদের পর কেউই মাল আনে নাই। ব্যাপারিরা গ্রামে গেছে। ঈদের আগের মালই ১০ টাকা করে কমে বেচতেসি। কাস্টমারও কম এখন।’
ঈদের আগেই পোল্ট্রি মুরগির দাম কমেছিল কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা। এ দিকে বাজারে এখন মুরগির চাহিদা কম বলে জানান বিক্রেতারা।
ঈদের আগেই দাম কমেছিল মুরগির। এখনও বাড়েনি। ছবি: নিউজবাংলা
রোবাবারের বাজারে পোল্ট্রি মুরগি ১৪০ টাকা কেজি। ঈদের আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি। সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি। পাকিস্তানি মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা। দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।
মুরগির বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহলের মুরগি ব্যবসায়ী মো. আরিফ বলেন, ‘মুরগির উৎপাদন আছে, ক্রেতা নাই। মুরগি খাওয়ার লোক নাই ঢাকায়। সবাই ঈদ করতে দেশে গেছে। মুরগি আসতেছেও কম। যারা পিকাপে করে মুরগি আনতো তারা এখন ঈদ করে।’
ঈদের আগেও খাসির মাংস ছিল ৯০০ টাকা কেজি। এখনো ৯০০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৬২০ থেকে ৬৩০ টাকা কেজি।
গরুর মাংসের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. জাবেদ বলেন, ২৬ রোজা থেকে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। ২৬ রোজার আগে ছিল ৫৭০ থেকে ৫৮০ টাকা।
‘খাসির মাংসের দাম একই আছে। ঈদে সবাই দেশে গেছে তাই চাহিদা কম এখন। গাবতলির ব্যাপারিরা নাই এখন। গরু নাই গাবতলির হাটে। যার কাছে দুই-চারটা গরু আছে তারা বেশি দামে গরু বিক্রি করতেছে। আমারা একেকটা গরু প্রায় ১০ হাজার টাকা বেশি দিয়ে কিনে আনতেছি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতেছি। গরু হাটে আসা শুরু করলে সপ্তা খানেকের মধ্যে আবার দাম কমবে।’