ইউটিউব দেখে ফল চাষ যেন নেশায় পরিণত হয়েছে কুমিল্লার আনোয়ার হোসেনের। বারোমাসি ব্ল্যাকবেরি ও হলুদ তরমুজ চাষের পর এবার মরুভূমির ফল সাম্মাম চাষে সফল হয়েছেন তিনি।
কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন। নিজের বাড়ির পাশের ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন সাম্মাম । প্রথম বছরেই ভালো ফলন হয়েছে।
বাংলাদেশে সাম্মাম রক মেলন, সুইট মেলন, মাস্ক মেলন, হানিডিউ নামেও পরিচিত। এই ফল দুই ধরনের হয়। একটির হলুদ মসৃণ আবরণের ভেতরের অংশ বাঙ্গির মতো। আনোয়ারের চাষ করা সাম্মাম দ্বিতীয় প্রজাতির। এর বাইরের আবরণ খসখসে এবং ভেতরের অংশ হালকা হলুদ বর্ণের।
বাগানে সাম্মাম গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত আনোয়ার হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
আনোয়ার হোসেনের সাম্মাম বাগান ঘুরে দেখা যায়, মাচায় ঝুলে আছে মাঝারি-বড় আকারের সাম্মাম। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সবুজ লতানো গাছগুলো নেতিয়ে রয়েছে। জমির চারপাশে ড্রেন তৈরি করা আছে যেন বৃষ্টির পানি তাড়াতাড়ি নেমে যায়।
আনোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় আড়াই মাস আগে হলুদ তরমুজের বীজ কিনতে ঢাকায় যাই। সে সময় বীজ বিক্রেতা আমাকে এই সাম্মামের সঙ্গে পরিচয় করান। বিভিন্ন ধরনের ফল চাষের প্রতি আগ্রহ থেকেই আমি সাম্মামের বীজ আনি। পরে ইউটিউব দেখে শুরু করি চাষ। এখন আমার বাগানে এক হাজারের মতো সাম্মাম রয়েছে।’
তিনি জানান, ইউটিউবে দেশি ও প্রবাসী কৃষকদের ভিডিও দেখেই ফল চাষে উৎসাহী হন আনোয়ার। বীজ, সার, শ্রমিকের মজুরিসহ তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ২০ টাকা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে সব খরচ বাদ দিয়ে দেড় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
বাগানে সাম্মাম গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত আনোয়ার হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
আনোয়ার বলেন, ‘সুপার শপে এই ফলের দাম প্রতি কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা। আমি ২০০ টাকা প্রতি কেজিতে এই ফল বিক্রি করছি। পাইকারিভাবে এখনও বিক্রি শুরু করি নাই। অনেক ক্রতা আমার বাগানে এসে এই ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। পাকা ফলগুলো তাদের কাছে বিক্রি করছি।’
- আরও পড়ুন: ইউটিউব দেখে চাষ করলেন হলুদ তরমুজ
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আনোয়ার হোসেন গত বছর ইউটিউব দেখে কালো তরমুজ চাষ শুরু করেন। সে সময় তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা। এ বছর হলুদ তরমুজের পর চাষ করলেন সাম্মাম। ফলনও ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সাম্মাম চাষে কুমিল্লার মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। এই ফলটি রসালো। খেতেও সুস্বাদু।’
মিজানুর জানান, আনোয়ারকে দেখে জেলার অনেকেই সাম্মাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।