বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইউটিউব দেখে চেরি টম্যাটো চাষে সফল মাসুদ

  •    
  • ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:১২

মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি ৪ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করে রোপণ করেছিলাম। বর্তমানে আমার ৫ শতক জমিতে প্রায় ৪০০টির মতো চেরি টম্যাটোর গাছ আছে। এটি অতি উচ্চ ফলনশীল সবজি। দীর্ঘ সময় এর ফলন পাওয়া যায়। গাছে সহজে পচন ধরে না।’

থোকায় থোকায় ঝুলছে চেরির মতো দেখতে টম্যাটো। ইতালিয়ান এই সবজির নামও চেরি টম্যাটো। বাড়ির পাশের ৫ শতক জমিতে সযত্নে গড়ে উঠেছে মাসুদ রানার এই চেরি টম্যাটোর ক্ষেত।

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের বেতগাড়ী গ্রামে মাসুদের এই খামারের শুরুটা হয়েছিল ইউটিউব দেখে। এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারাও। তাদেরই পরামর্শে গত বছরের অক্টোবরে একটি বীজ কোম্পানি থেকে ইতালির উন্নত জাতের চেরি টম্যাটোর ‘ম্যাগলিয়া রোসা’ জাতের বীজ সংগ্রহ করে জেলায় প্রথমবারের মতো চাষ শুরু করেন মাসুদ রানা খন্দকার।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। আকারে আঙুরের চেয়ে কিছুটা বড় এই টম্যাটো কাঁচা অবস্থায় সবুজ, আর পাকলে তা গাঢ় লাল ও কমলা রঙের হয়ে যায়। ফলন পাওয়া যায় সাধারণত চার মাস পর পর। প্রতিটি গাছ থেকে ৭ থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত চেরি টম্যাটো সংগ্রহ করা যায়।

মাসুদ রানার সফলতা দেখে প্রতিদিন তার ক্ষেতে ভিড় করছেন স্থানীয় চাষিরা। কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহায়তা ও পরামর্শ পেলে আগামী দিনে তারাও মাসুদের মতো চেরি টম্যাটো চাষ করতে চান।

স্থানীয় ভবানীপুর গ্রামের চাষি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা মূলত ধান ও সবজি হিসেবে আলু, বেগুন, শিম- এসব আবাদ করি। এই চেরি টম্যাটো আগে কখনো দেখিনি। মাসুদ জানালো- এর ফলন বেশি এবং লাভও অনেক বেশি। কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিলে আমিও এই টম্যাটোর আবাদ করব।’

মির্জাপুর গ্রামের চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন সময় টিভিতে দেখেছি এই টম্যাটোর চাষ। তবে নিজ চোখে এই প্রথম দেখলাম। মাসুদ ভাইয়ের ৫ শতক জমিতে ব্যাপক ফলন হয়েছে। রোগ বালাইও নাকি হয়নি। কী সুন্দর হয়ে প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে। খেয়েও দেখলাম অনেক সুস্বাদু। আমিও এই সবজি চাষ করব ভাবছি।’

চেরি টম্যাটো চাষি মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি ৪ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করে রোপণ করেছিলাম। বর্তমানে আমার ৫ শতক জমিতে প্রায় ৪০০টির মতো চেরি টম্যাটোর গাছ আছে। এটি অতি উচ্চ ফলনশীল সবজি। দীর্ঘ সময় এর ফলন পাওয়া যায়। গাছে সহজে পচন ধরে না। বাজারে ব্যাপক চাহিদার কারণে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এবার আমি পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছি।’

মাসুদ জানান, তার ৫ শতক জমিতে বীজ, পলি হাউস, মালচিং পেপার, সেচ, ভিটামিন জাতীয় ওষুধ, শ্রমিক খরচসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন।

চেরি টম্যাটোর বাজারদরের বিষয়ে মাসুদ বলেন, ‘বর্তমানে রাজধানী ঢাকার সুপারশপগুলোতে আমদানি করা চেরি টম্যাটো বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে। তবে নওগাঁয় চেরি টম্যাটোর বাজার নেই। কৃষি অফিসের সহায়তায় স্থানীয়ভাবে চেরি টম্যাটোর বাজার সৃষ্টি করা গেলে আগামী দিনে আরও বেশি জমিতে চাষ করব।’

মাসুদ আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকার মাটি এই সবজি চাষের জন্য উপযোগী। প্রতিদিনই আশপাশের গ্রাম থেকে চাষিরা আসছেন আমার খামার দেখতে। আমার কাছ থেকে তারা পরামর্শ নিচ্ছেন।’

রাণীনগর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আহসান হাবিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শীতকালে বেলে মাটিতে চেরি টম্যাটোর চাষ করা হলে চাষিরা লাভবান হতে পারবেন। পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে মাসুদ রানা সফল হয়েছেন। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই তার জমি থেকে বিক্রির জন্য চেরি টম্যাটো উঠানো যাবে।’

কৃষি কর্মকর্তা জানান, পলিশেড নেট হাউস দেয়ার কারণে মাসুদের খামারে পোকামাকড় প্রবেশ করতে পারে না। এ জন্যই সেখানে কীটনাশকমুক্ত চেরি টম্যাটো চাষ হচ্ছে।

স্থানীয়ভাবে চেরি টম্যাটো চাষ ও বাজার সৃষ্টি করতে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে উঠান বৈঠকও শুরু হয়ে গেছে।

এ বিভাগের আরো খবর