বিশ্বের অন্যতম সেরা আম বাংলাদেশে হলেও রপ্তানি এখনও তলানিতেই। এর মধ্যে চলতি বছর রপ্তানির চিত্র খানিকটাও হলেও আশা দেখাতে পারে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর রসাল ফলটির রপ্তানি পাঁচ গুণের বেশি বেড়েছে। গত বছর ২৮৩ মেট্রিকটন আম রপ্তানি হলেও এবার রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৬২৩ মেট্রিকটন।
তবে আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ মেট্রিকটন নির্ধারণের লক্ষ্যে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে প্রতিবছর এক লাখ মেট্রিকটন আম রপ্তানির লক্ষ্যে নির্ধারণ করতে যাচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
সোমবার বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘আম রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আমের উন্নত ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন।
চলতি বছর রপ্তানি পাঁচ গুণ বাড়লেও তা উৎপাদনের তুলনায় বেশ কম
কর্মশালায় জানান হয়, দেশে উৎপাদিত আমের বিরাট অংশ-গড়ে শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ সংগ্রহের সময় নষ্ট হয়। তবে খিরসাপাত আম নষ্ট হয় ৩৭ শতাংশ। ফজলি আম নষ্ট হয় ২৯ শতাংশ। এতে ক্ষতির পরিমাণ বছরে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
দেশে বছরে ২৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘অথচ রপ্তানি হয় মাত্র কয়েকশ টন আম। বছরে এক লাখ টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন, রোডম্যাপ প্রণয়ন ও আমের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। রপ্তানির বাধাসমূহ চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে, নিরাপদ আমের নিশ্চয়তা দিতে তিনটি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে।’
‘আম রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আমের উন্নত ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য রাখছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আসাদুল্লাহ।
কর্মশালায় আম রপ্তানির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য নতুন বাজার অনুসন্ধান, রপ্তানি চাহিদা অনুযায়ী উন্নতজাত নির্বাচন, ফাইটোস্যানিটারি পদ্ধতি ও আমদানিকারক দেশের উত্তম কৃষি চর্চা মেনে আম উৎপাদন, সার্টিফিকেশন, উন্নত প্যাকিং, উন্নত সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থা, রপ্তানি কার্যক্রমে দক্ষতা, সচেতনতা ও প্রশিক্ষণ, বিমান বন্দরে সুষ্ঠু কার্গো ব্যবস্থাপনার উপর কর্মশালায় গুরুত্বারোপ করা হয়।