খুব সকালে নয়তো গোধূলিবেলায় কুমিল্লার গোমতী নদীতে মাছ শিকার করেন জেলেরা। তাদের জালে ধরা পড়ে বাগদা চিংড়ি, বোয়াল, কালবাউশ, বাইনসহ নানা প্রজাতির মাছ।
কয়েক দিন ধরে গোমতী নদীতে জেলেদের জালে দুই-একটা করে ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ। এগুলো নদীর পাড় থেকেই কিনে নিচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
গোমতী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর-পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের ডুমুর নামক স্থানে উৎপন্ন হয়ে ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করে কুমিল্লা সদর উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তারপর গোলাবাড়ী, টিক্কারচর, কাপ্তানবাজার হয়ে জেলার ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, কোম্পানীগঞ্জ, দাউদকান্দি হয়ে জোয়ারভাটাহীন নদীটি মেঘনার সঙ্গে মিলেছে।
গোমতীর আলেখারচর অংশে শনিবার বিকেলে জেলেদের জালে চিংড়ি কালবাউশের সঙ্গে একটি ইলিশ ধরা পড়ে।
জেলে আবদুর রহিম বলেন, ‘মাজে মইধ্যে দুই একডা ইলিশা মাছ পাই। ইলিশাটি ছোডু। মাঝে মইধ্যে আবার বড়ও ধরা পড়ে। কয়দিন আগে এক কেজি ওজনের একটা পাইছিলাম। আশটে শ (৮০০) টেহায় বেচ্চি।’
গোমতী নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া নিয়ে বিস্মিত নন নদীপাড়ের মানুষ।
নদীটির আদর্শ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘মইধ্যে মইধ্যে এক-দুইডা ইলিশ পাওন যায়। জাউল্লাডি (জেলেরা) জাল দিয়া বেড় দেয়। একটা-দুইডা ইলিশ উডে। এডি আবার মাইনষে বেশি দামে কিন্না লইয়া যায়।’
গোমতী নদীতে ইলিশ পাওয়া বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহিউদ্দিন মো. শাহজাহান ভূঁইয়া।
তিনি জানান, ইলিশ মূলত সামুদ্রিক মাছ। তবে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় প্রজননের জন্য উজানের পদ্মা, মেঘনাসহ অন্যান্য নদীতে আসে।
তিনি আরও বলেন, ‘গোমতী নদীটি মেঘনার সঙ্গে মিলেছে। প্রজননের সময় পদ্মা ও মেঘনা হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে দু-চারটে ইলিশ গোমতীতে চলে আসতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা না।’