বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বৃষ্টির অভাবে বন্ধ আমনের চারা রোপণ

  •    
  • ৩১ জুলাই, ২০২১ ০৮:৪৩

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বর্ষা মৌসুমে পঞ্চগড় জেলায় উফশী, হাইব্রিড ও স্থানীয় মিলিয়ে ৯৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে।

বর্ষা ঋতুর দ্বিতীয় মাস শ্রাবণে সাধারণত টানা বৃষ্টি থাকে দেশে। তবে শ্রাবণের অর্ধেক চলে গেলেও পঞ্চগড়সহ দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে দেখা নেই বৃষ্টির। এতে অনেকটা প্রকৃতিনির্ভর আমন চারা রোপণ ব্যাহত হচ্ছে।

মূল মৌসুমে দুই সপ্তাহের বেশি সময় বৃষ্টি না হওয়ায় অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিগুলোতে এখনও চারা রোপণ করতে পারেননি কৃষকরা। এতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

পঞ্চগড় কৃষি বিভাগ জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন বর্ষাকালে ঠিকমতো বৃষ্টির দেখা মিলছে না। গত বছর জুলাই মাস পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫১০ মিলিমিটার। সেখানে এ বছর জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১ হাজার ৪২৭ মিলিমিটার।

এমন পরিস্থিতিতে সেচযন্ত্র ব্যবহার করে কৃষকদের আমন চারা রোপণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এভাবে কৃষকরা আমন চারা রোপণের কাজ শেষ করবেন বলে আশা কৃষি বিভাগের।

কৃষকরা জানান, হিমালয়ের খুব কাছে অবস্থানের কারণে পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলাগুলোতে বন্যার প্রকোপ কম থাকায় নিচু ও অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে প্রকৃতিনির্ভর আমন ধান চাষ করা হয়। বর্ষার শুরুতেই চারা রোপণ শুরু হয়। এরপর হওয়া বৃষ্টির পানিতেই উঠে আসে আবাদ। আলাদা করে সেচ দিতে হয় না।

এ বছরও মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ার পর আমন চারা রোপণ শুরু করেন কৃষকরা। তবে শেষদিকে এসে পানির অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে চারা রোপণের কাজ। নিচু জমিতে চারা রোপণ শেষ হলেও প্রায় ১৪ দিন বৃষ্টি না হওয়ায় অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে পানির অভাবে এখনও চারা লাগানো যায়নি। আগে চারা লাগানো অনেক জমির পানিও শুকিয়ে গেছে।

আমনের চারা লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা অনেক জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে এসব জমিতে আর চারা রোপণের সময় থাকবে না। চারা রোপণ করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার কায়েত পাড়ার চাষি আনিসুর রহমান জানান, পানির অভাবে ১০ বিঘা জমিতে আমন চারা লাগাতে পারছেন না। সময়মতো রোপা লাগাতে না পারলে ফলন নেমে আসবে অর্ধেকের কমে।

সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া গ্রামের কৃষক হাশেম আলী বলেন, ‘আমি এবার প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে আমন আবাদ করব। ইতোমধ্যে ১৫ বিঘা জমিতে আমন চারা লাগানো হয়েছে। পানির অভাবে এখনও ৩ বিঘা জমিতে চারা লাগাতে পারিনি।

‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে এ জমিগুলো পতিত রাখতে হবে। আরেক সমস্যা হলো, যেসব জমিতে চারা লাগিয়েছি সেগুলো পানির অভাবে শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি না হলে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিতে হবে। এতে করে উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে।’

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বর্ষা মৌসুমে পঞ্চগড় জেলায় উফশী, হাইব্রিড ও স্থানীয় মিলিয়ে ৯৯ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, এরই মধ্যে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ শতাংশ জমিতে আমন চারা লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় বাকি জমিতে চারা লাগানোর কাজ থমকে আছে।

তিনি বলেন, ‘আমি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে সেচ দিয়ে হলেও জমিতে চারা রোপণের পরামর্শ দিচ্ছি। আমাদের পরামর্শ মোতাবেক অনেক কৃষক শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে চারা রোপণের কাজ শুরু করেছেন। আমরা আশা করছি, আগামী দেড় সপ্তাহের মধ্যে জমিতে আমন চারা রোপণের কাজ শেষ করতে পারবেন চাষিরা।’

এ বিভাগের আরো খবর