ফেসবুক এখন আর শুধু নিজেদের তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম নয়। ফেসবুকে রীতিমতো জমজমাট হয়ে উঠেছে কোরবানির পশু বেচাকেনার অনলাইন হাট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতিটি উপজেলায় কোরবানির পশু বিক্রির জন্য খোলা হয়েছে ফেসবুক পেজ।
খামারিরা তাদের পশুর তথ্য ছবিসহ আপলোড করছেন সেই পেজে। ক্রেতারা তথ্য পড়ে, ছবি দেখে কিনছেন মনমতো গরু।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় জানিয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১২ হাজার ৩৭০টি তালিকাভুক্ত পশুর খামার আছে। এই খামারগুলোতে এবারের ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৪৭৭টি পশু।
এর পাশাপাশি অনেকেই ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য পারিবারিকভাবে পশু পালন করেন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই জেলায় এ বছর কোরবানির পশুর চাহিদা ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২টি।
অনলাইনে পশু বিক্রি হবে কি না এই শঙ্কা কাটতে শুরু করেছে খামারিদের। এভাবে গরু কিনে নতুন অভিজ্ঞতা পেয়ে খুশি অনেক ক্রেতাও।
পৌর এলাকার গোকর্ণঘাটের নিউ প্রিন্স ডেইরি ফার্মে ১৩০টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যেই অনলাইনে ৫৩টি গরু বিক্রি করেছেন। তাদের খামারে ১ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকার গরু আছে।
খামারের মালিক মো. নাসিরউদ্দিন জানান, তিনি প্রতিদিনই গরু বিক্রি করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আশপাশের জেলা থেকে ক্রেতারা এসে খামার থেকে গরু নিয়ে যাচ্ছেন। তার আগেই অনলাইনে ঠিক করে রাখছেন পছন্দের গরু।
নাইমা হাম্বা ফ্যাক্টরি নামের খামারে আছে ২১টি গরু। তার মধ্যে অনলাইনে বিক্রি হয়ে গেছে পাঁচটি।
এর মালিক পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শরীফ ভান্ডারি জানান, এ বছরই তিনি খামারটি করেছেন। আগামীতে আরো বেশি গরু লালনপালন করবেন।
কাউসার এগ্রো ফার্মে আছে ফাইটার, খাসা, শাহিওয়াল, হরিয়ান ও নেপালি জাতের গরু।
রূপচান্দ বিবি ডেইরি খামারের মালিক জানান, অনলাইনের পাশাপাশি সরকার হাট বসানোর অনুমতি দেয়ায় তারা এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত।
শুধু একক উদ্যোগেই নয়, নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামে ১২ বন্ধু মিলে গড়ে তুলেছেন স্বপ্ন ডেইরি অ্যান্ড এগ্রো ফার্ম।
তাদের ফার্মের ৩৯টি গরুর মধ্যে ১১টিই অনলাইনে বিক্রি করে ফেলেছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ. বি. এম সাইফুজামান বলেন, ‘কোরবানির পশু নিয়ে খামারি বা ক্রেতাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রতিটি উপজেলায় ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছে। অনলাইনে কোনো ভোগান্তি ছাড়াই পশু কেনাবেচা চলছে।’