স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে চার গুণের বেশি। এমনটি জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
মন্ত্রী বলেন, ১৯৭১-৭২ সালে যেখানে চাল উৎপাদন ছিল মাত্র ১ কোটি মেট্রিক টন, সেখানে ২০২০ সালে তা বেড়ে প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে খাদ্যঘাটতির দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
বুধবার বিকেলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) আয়োজিত ‘কোভিড পরিস্থিতিতে জলবায়ুসহনশীল কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থার রূপান্তর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা জানান আব্দুর রাজ্জাক।
শুধু চালের মোট উৎপাদন নয়, চালের উৎপাদনশীলতায়ও দেশ অনেক এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, ১৯৯১ সালে হেক্টরপ্রতি চালের গড় উৎপাদন ছিল ১.৭১ টন। আর ২০২০ সালে হেক্টরপ্রতি চাল উৎপাদন হয়েছে গড়ে চার টনেরও বেশি।
কেন উৎপাদন বেড়েছে, সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, কৃষি গবেষণার মাধ্যমে ফসলের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, কৃষি-উপকরণে ভর্তুকি প্রদান ও সহজলভ্যকরণ, সারের সুষম ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, সেচসুবিধা সম্প্রসারণ, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য টেকসই কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলেই এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
রাজ্জাক আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি বিরূপ প্রভাব পড়বে দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিতে। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্যব্যবস্থা দুর্বল হবে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে জলবায়ুসহনশীল কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং প্রতিকূলসহিষ্ণু উন্নত মানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম জোরালোভাবে চলছে বলে সংলাপে জানান মন্ত্রী।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, ইরির দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক প্রতিনিধি ড. নাফিস মিয়া, গবেষণা পরিচালক ড. অজয় কোলিসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সংলাপে অংশ নেন।
আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের ‘ফুড সামিট ২০২১’ সামনে রেখে ইরি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এ সংলাপের আয়োজন করে। দেশগুলোতে কৃষিতে অর্জিত সাফল্য, বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ সংলাপে তুলে ধরা হয়। এই আলোচনায় প্রাপ্ত সুপারিশগুলো জাতিসংঘের ‘ফুড সামিট ২০২১’-এ আন্তর্জাতিক পলিসি প্রণয়ন ও কর্মসূচি পরিচালনায় সহায়ক হবে।