বাহাদুর ও কালো মানিক, ময়মনসিংহের কোরবানির পশুদের মধ্যে বেশ দাপটে আছে এই দুটি গরু। নাম শুনেই অনেকে ছুটে আসছেন গরুগুলো একবার দেখতে। দেখতেও যেমন, দামেও তেমন।
হালুয়াঘাট উপজেলার ১১ নম্বর আমতৈল ইউনিয়নের নাগলা বাজার এলাকার এবাদুল ইসলামের গরু বাহাদুর।
ফ্রিজিয়ান জাতের সাদাকালো রঙের বাহাদুরের উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট, লম্বায় সাত ফুট ও দাঁত আটটি। ওজন প্রায় ৩৬ মণ।
এবাদুলের আশা এই গরু তিনি বিক্রি করবেন ২৫ লাখ টাকায়।
তিনি জানান, বাহাদুরকে নিয়মিত খড়, কলা, ভুসি, খুদি ও ভুট্টা খাওয়ানো হয়। খাবার বাবদ প্রতিদিন খরচ হয় ৫০০ টাকা।
গত বছর কোরবানি ঈদের আগেও তিনি বাহাদুরকে বিক্রির জন্য হাটে তুলেছিলেন। কিন্তু দাম সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা ওঠায় বিক্রি করেননি। এই এক বছরে ষাঁড়টি আরও মাংসালি ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তাই বেড়েছে দামও।
ষাঁড়টিকে নিয়মিত চিকিৎসা দেন স্থানীয় পশু চিকিৎসক আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, বাহাদুরের শরীরে কোনো রোগবালাই নেই। সুস্থ-সবল একটি গরু বাহাদুর।
এখন পর্যন্ত কয়েকজন ক্রেতা ১৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বাহাদুরের দাম বলেছে। পরিবারের লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করে চূড়ান্ত দাম জানাবেন এবাদুল।
এদিকে ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের জাকির হোসেন সুমন চার বছর ধরে লালনপালন করে বড় করেছেন কালো রঙের ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কালো মানিক।
সুমন জানান, গায়ের রং কালো হওয়ায় তিনি গরুটির এই নাম দিয়েছেন। এর উচ্চতা ছয় ফুট ও লম্বায় ১০ ফুটেরও বেশি।
৩৭ মণের বেশি এই গরুটির খাবার বাবদ প্রতিদিন খরচ হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।
সুমন জানান, গত বছর ভালো দাম না পাওয়ায় গরুটি বিক্রি করেননি। এবার গরুটির দাম চান ৩০ লাখ টাকা।
স্থানীয় পশু চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি নিয়মিত ষাঁড়টিকে চিকিৎসাসহ পরামর্শ দিয়ে আসছেন। মোটাতাজাকরণে ব্যবহার করেননি কোনো রকমের হরমোন বা ওষুধ। প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে ষাঁড়টিকে লালনপালন করা হয়েছে। এর শরীরে কোনো ধরনের রোগ নেই।
ময়মনসিংহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, ‘ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জেলায় অনলাইনে কোরবানির পশু বেচাকেনা করতে www.qurbanihatmym.com নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। প্রশাসনের নির্ধারিত কর্মকর্তারা এটি পরিচালনা করবেন।’
তিনি জানান, ক্রেতাদের সুবিধার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা খামার মালিক ও বিক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পশুর বিস্তারিত তথ্য ওই সাইটে তুলে ধরবেন। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একজন ক্রেতা কোরবানির পশুর ছবি, ওজন, উচ্চতা, মালিকের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর জানতে পারবেন। আলোচনাসাপেক্ষে পছন্দসই পশুটি চলে যাবে ক্রেতার ঠিকানায়।
অনলাইনে পশু কেনার ক্ষেত্রে প্রচারিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ময়মনসিংহ জেলায় গরুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজারের মতো। গরু আছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজারের মতো।