বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উত্তরাঞ্চলের সেরা ‘নয়া দামান’

  •    
  • ৬ জুলাই, ২০২১ ২১:৪০

নয়া দামান দেখতে আসা বামনডাঙ্গা গ্রামের আক্কাস আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘গরু দেখলেম। গরু দেখি খুব তৃপতি (তৃপ্তি) পালেম। বিভিন্ন জেলাত থাকি লোক আসে গরু দেখপের। দেখে এবং বকশিও দিয়ে যায় আর কী, গরুর খাওয়া খাদ্দ্যর (খাদ্য) জন্য। এত বড় বিশেল (বিশাল) গরু জীবনের পত্তেম (প্রথম) দেখলেম।’

‘আইলারে নয়া দামান আসমানেরি তেরা/ বিছানা বিছাইয়া দিলাম শাইল ধানের নেড়া/ দামান বও দামান বও’- আলোচিত সিলেটের সেই আঞ্চলিক গানের সঙ্গে মিল রেখে এবার গরুর নাম রাখা হয়েছে ‘নয়া দামান’। পরম যত্নে গোখাদ্যের পাশাপাশি ফলমূল খাইয়ে ‘জামাই আদরে’ লালন-পালন করায় এর নাম দেয়া হয়েছে ‘নয়া দামান’।

৩০ মণের ফ্রিজিয়ান জাতের কালো রঙের এই গরুটি লালন-পালন করেছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মাদ্রাসাশিক্ষক আবুল কাশেম মাস্টার। তবে করোনা মহামারিতে পশুর হাট বন্ধ থাকায় গরুটি বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তিনি।

ঈদের আগে গরুটি অনলাইনে বিক্রি করতে চান আবুল কাশেম। এ পর্যন্ত ক্রেতারা গরুটির দাম ৮ লাখ টাকা হাঁকালেও তিনি এতে সন্তুষ্ট নন।

চার বছরের ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি উচ্চতায় সাড়ে ৫ ফুট ও লম্বায় ৯ ফুট। আবুল কাশেম গরুটির দাম হাঁকিয়েছেন ১৫ লাখ টাকা।

আবুল কাশেম জানান, প্রায় দেড় লাখ টাকায় তিন বছর আগে স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষকের কাছ থেকে গরুটি ক্রয় করেন। এরপর থেকে নিজ খামারে পরম যত্নে পশুটিকে লালন-পালন করছেন। গরুটির খাবারের তালিকায় রয়েছে চাল, ডাল, ভাত, ভুসি, ঘাস, আপেল, কলা, আঙুর ও মাল্টা। প্রচণ্ড গরমে পশুটিকে দেয়া হয়েছে ডাবের পানি। এতে প্রতিদিন খাবার বাবদ দুই হাজার টাকার বেশি খরচ হয় তার।

তিনি বলেন, “গরুটি কেনার পর থাকি যত্নসহকারে গমের ভুসি, ধানের ভুসি, সয়াবিনের ভুসি, খৈল ও কলা খাওয়াচ্চি। যত্নসহকারে এর প্রতিপালন করতিছি। যার ফলে এর আমি নাম দিছি ‘নয়া দামান’।”

তিনি আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় এটা হাটে তোলার কোনো চিন্তাভাবনা নাই। খুব চিন্তিত আচি। তবে এটা যাতে অনলাইনে বিক্রি করা যায় সেই চিন্তাভাবনা করতিচি। এর আগে ক্রেতা ৮ লক্ষ টাকা দাম বলচি। আমি দেই নাই।

‘আমি জীবনে এত বড় গরু করতে পাই নাই। আমি মনে করি, উত্তরাঞ্চলের মধ্যে এটা বড় গরু। এর চেয়ে আর বড় গরু নাই।’

অল্প সময়ে নয়া দামান নামের গরুটি এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। এটি দেখতে আগ্রহের কমতি নেই গ্রামবাসীসহ দূরদূরান্ত থেকে আসা নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের।

তারা বলেন, বিশাল আকারের গরুটি যেন একটি আস্ত হাতি। এমন গরু এর আগে কখনও চোখে পড়েনি তাদের। গরুটি নিয়ে আনন্দ-গর্বেরও শেষ নেই।

প্রতিবেশী রাজ্জাক মিয়া বলেন, ‘আমি কল্পনাও করিনি গরু আসলে এত বড় সাইজের হবে। যে একটা হাতির সঙ্গে তুলনা করা যাবে। আর এর খাওয়াদাওয়াও নরমাল গরুর চাইতে আলাদা।’

নয়া দামান দেখতে আসা বামনডাঙ্গা গ্রামের আক্কাস আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘গরু দেখলেম। গরু দেখি খুব তৃপতি (তৃপ্তি) পালেম। বিভিন্ন জেলাত থাকি লোক আসে গরু দেখপের। দেখে এবং বকশিও দিয়ে যায় আর কী, গরুর খাওয়া খাদ্দ্যর (খাদ্য) জন্য। এত বড় বিশেল (বিশাল) গরু জীবনের পত্তেম (প্রথম) দেখলেম।’

নয়া দামান দেখতে ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সুন্দরগঞ্জ থেকে সপরিবারে আবুল কাশেমের বাড়িতে এসেছেন আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অনেক লোক গরু দেখতে এসেছে। আমরাও শুনে এসেছি। এত বড় গরু গাইবান্ধা জেলা নয়; এটি উত্তরবঙ্গের কোথাও নাই বলে মনে করি।’

এক বছর ধরে গরুটিকে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন বামনডাঙ্গার আবদুল ওয়াহাব নামের একজন পশু চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘গরুটি নরমাল গরুর মতোই বেড়ে উঠেছে। এটির শরীরে কোনো প্রকার মোটাতাজাকরণ ওষুধ বা ইনজেকশন দেয়া হয়নি। গরুটি বর্তমানে একদম সুস্থ।’

এ বিভাগের আরো খবর