বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যে আমের কেজি হাজার টাকা

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২১ ১৯:৩২

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চাষ শুরু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম রেড ম্যাঙ্গো বা সূর্যডিম আম। দেশে সবচেয়ে বড় সূর্যডিম আমের বাগানটি গড়ে তুলেছেন কাজী মাহবুবুর রহমান নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা আর তার দুই মেয়ে।

সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চাষ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম রেড ম্যাঙ্গো, যা এ দেশে সূর্যডিম নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

দেশের কয়েকটি জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে এ সূর্যডিমের চাষ শুরু হলেও এটির সবচেয়ে বড় বাগান এখন তেঁতুলিয়ায়।

তেঁতুলিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মাহবুবুর রহমান কাজীপাড়া গ্রামে ২০১৭ সালে এই আমের বাগান গড়ে তোলেন।

বাগানে শুরুতে তিনি দুই শ সূর্যডিম আমের গাছ লাগান। পরে আরও ১৩০টি আমের চারা লাগান তিনি।

উপশহরের অদূরেই কাজীপাড়া গ্রাম। ভারতীয় সীমান্তের কোল ঘেঁষে এই আমের বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। গাছে গাছে ঝুলে আছে সূর্যডিম আম। সবুজ, বেগুনি আর গাঢ় লাল রংয়ের মিশ্রণে দেখতে অনিন্দ্য সুন্দর এই আম। প্রত্যেক গাছে ৫০ থেকে ৬০টি আম ধরেছে।

৪ শ থেকে ৫ শ গ্রাম ওজনের এই আম বিক্রিও শুরু হয়েছে। জাপানে এই আমের কেজি ১০০ ডলার বা ৮ হাজার টাকার মতো হলেও বাংলাদেশে প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ৭ শ থেকে হাজার টাকায়। সৌখিন আম ভক্তরা এই সূর্যডিম আম কিনছেন।

বাগানের মালিক কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, এক নিকটাত্মীয়ের কাছে এই আমের বর্ণনা শোনেন তিনি। এরপর ২০১৭ সালে ঢাকা থেকে এই আমের চারা সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেন তার দুই মেয়ে।

মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জমি আমার হলেও মূলত আমার দুই মেয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী মৌসুমী এবং সাংবাদিক কাজী মহুয়া এই আমের বাগান করেছেন। তারাই ঢাকা থেকে সূর্যডিম আমের চারা সংগ্রহ করেন।’

মাহবুবুর রহমান জানান, তার বাগানে আমের ফলন শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে। শুরু থেকেই এই আম দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রযুক্তি এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে তেঁতুলিয়ার সূর্যডিম আম বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।

তেঁতুলিয়ার জমিতে এই আমের প্রচুর ফলন হয়।

মাহবুবুর রহমান শুধু সূর্যডিমই নয়, আরও কয়েক প্রকার বিদেশি জাতের আমের চাষ করছেন। আট একর জমিতে তিনি পিউজাই, বারি ফোর, ব্যানানা এবং রেড পালমা আমের চাষ করছেন।

প্রত্যেক প্রজাতির আমের গাছে ভালো ফলন এসেছে। এ বছর আরও চার একর জমিতে তিনি বিভিন্ন প্রজাতির আম লাগাচ্ছেন। এই আমের বাগান এখন দেখতে আসছেন অনেকে। অনেকে এসব প্রজাতির আমের বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকার উদ্যোগ নিলে এই আমের চারা উৎপাদন করে চাষিদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।

সূর্যডিম মূলত জাপানের প্রজাতি। জাপানের মিয়াজাকি এলাকায় এই আম প্রথম চাষ হয়। তাই জাপানে এই আম মিয়াজাকি নামে পরিচিত। রেড ম্যাঙ্গো বা এগস অফ সান নামেও এই আম পরিচিত।

বর্তমানে বিভিন্ন দেশে এই আমের চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি এবং তেঁতুলিয়ায় এই আমের চাষ শুরু হয়েছে। বিশ্ববাজারে এই আমের দাম ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা কেজি। তবে এখনও এই আমের কথা দেশের অনেকেই জানেন না।

সৌন্দর্য, স্বাদ এবং পুষ্টিগুণে সেরা হওয়ায় বাজারে চাহিদা অনেক বেশি। সেই তুলনায় বাংলাদেশে এই আমের উৎপাদন কম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, তেঁতুলিয়ার সমতলভূমি সূর্যডিম আম চাষের উপযোগী।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কাজী মাহবুবুর রহমানের সূর্যডিম আমের বাগান দেখেছি। প্রচুর ফলন হয়েছে। আমের প্রকৃতি ও স্বাদও ভালো। আমরা মনে করছি এই এলাকায় সূর্যডিম আম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু সূর্যডিম নয়, বিদেশি উন্নত জাতের নানা প্রজাতির আম চাষও সম্ভব এই উপজেলার সমতলভূমিতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এসব আম চাষে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর