বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউন: কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় খামারিরা

  •    
  • ২৫ জুন, ২০২১ ১৬:২৯

‘লাভের আশার চেয়ে আমরা চিন্তিত বেশি। লকডাউনের কারণে ঠিকমতো হাটে নিতে পারব কি না। হাটে পৌঁছাতে পারব কি না। আর গ্রাহকরা খামারে আসবেন কি না, সেটা নিয়েও চিন্তায় আছি ।’

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের খামারিরা। সকাল-সন্ধ্যা কাটছে গরু ও অন্যান্য পশু মোটাতাজা ও পরিচর্যার কাজে। ঈদের সময় যত এগিয়ে আসছে, খামারিদের ব্যস্ততা তত বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা।

পশু খামারিদের কপালে চিন্তার এ ভাঁজ করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে। মহামারির কারণে এ বছর চাহিদামতো গরু মোটাতাজা করতে পারেননি অনেকে। আবার বেড়ে গেছে গোখাদ্যের দাম। এরপরও তারা গরু মোটাতাজা করেছেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেই গরু বেচতে পারবেন কি না তা নিয়েই তাদের দুশ্চিন্তা।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে জানা যায়, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সাত উপজেলায় এ বছর ১০ হাজার ৯২৬ খামারে পশু মোটাতাজা করা হচ্ছে। জেলায় এ বছর ২৭ হাজার ৫৫৪টি ষাঁড়, ৯২৮ বলদ, ১৩ মহিষ, ১৬ হাজার ২৮৬ ছাগল, ২ হাজার ৮৩৯ ভেড়াসহ ৫৫ হাজার ৮৮৮টি গবাদিপশু মোটাতাজা করা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ সদরের গড়পাড়ার গ্রিন ফার্মের পরিচালক ও খামারি আবুল কালাম জানান, তার খামারে দেশি, শাহিয়াল, ক্রস, অস্ট্রেলিয়ান, দেশি বার্মা, সিন্ধি জাতের ৮৯টি গরু আছে। যার মধ্যে ৫০টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘লাভের আশার চেয়ে আমরা চিন্তিত বেশি। লকডাউনের কারণে ঠিকমত হাটে নিতে পারব কি না। হাটে পৌঁছাতে পারব কি না। আর গ্রাহকরা খামারে আসবেন কি না, সেটা নিয়েও চিন্তায় আছি।

‘সাধারণ সময়ে যে গরু বেচাকেনা হয়, সেভাবে বেচাকেনা হলে লোকসান গুনতে হবে। কারণ কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমরা অনেক বেশি গরু লালন-পালন করে থাকি। তবে এবারের করোনা ও লকডাউনের কারণে লোকসানের আশঙ্কাই বেশি।’

সদরের চান্দর এলাকার খামারি মোসলেম উদ্দিন জানান, তার খামারে ৯টি গরু আছে। যার মধ্যে পাঁচটি কোরবানির জন্য মোটাতাজা করা হয়েছে। তবে করোনার কারণে খরচ পড়েছে অনেক বেশি। বিশেষ করে গরুর খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখন যদি ভারতের গরু না আসে, আর ঠিকমতো হাটে নেয়া যায়, তাহলেই শুধু ভালো দাম পাওয়া যাবে।’

আরেক খামারি দুলাল মিয়া জানান, গরু মোটাতাজার কাজে সকাল-সন্ধ্যা পরিশ্রম করতে হয়। সকালে গরুকে খাওয়ানো, গোসল করানো, আবার গরম বেশি পড়লে বারবার গোসল করাতে হয়। এ ছাড়া সারাক্ষণ ফ্যান চালাতে হয়। সব মিলিয়ে প্রায় সারা দিনই যায় গরুর পেছনে।

গরুর পরিচর্যা করতে করতে নিজেদের খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করতে পারেন না। এ সবকিছুই করেন একটু লাভের আশায়।

খামারের কর্মচারী শের আলী বলেন, ‘খামারের গরুগুলোকে ঘাস আর ভুসি খাওয়ানো হয়। ভুসি কিনে আনতে হয়। আর ঘাস চাষ করতে হয়েছে। প্রতিদিন ক্ষেত থেকে সেই ঘাষ কাটি, পরে খামারে এনে মেশিনে কেটে গরুকে খাওয়াই।’

মানিকগঞ্জে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়। প্রতিটি খামারির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করা হয় ও পরামর্শ দেয়া হয়।

‘নিরাপদ পশু ও গবাদিপশুর জন্য মানিকগঞ্জ জেলার পরিচিতি আছে। পশু পালনের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন খামারিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অপরদিকে দেশে কোরবানির পশুর চাহিদাও পূরণ করছেন।’

তিনি জানান, কোরবানির সময় রাজধানীর গাবতলীর পশুর হাটে যে গবাদিপশু বেচাকেনা হয়। তার ৩০ শতাংশ পশু যায় মানিকগঞ্জ থেকে। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় পাঁচ হাজারের মতো গবাদিপশু মোটাতাজা কম হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর