ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় রোধ করে বৃষ্টির পানি কাজে লাগিয়ে আউশ আবাদ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সিরাজগঞ্জের কৃষকদের মাঝে।
সরকারি প্রণোদনায় বিনা মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও নিবিড় মনিটরিংও কৃষকদের এই ধান আবাদে আগ্রহী করে তুলেছে। বোরো ধানের ভালো দাম পাওয়াও ভূমিকা রেখেছে কৃষকদের এই আগ্রহে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোস্তম আলী নিউজবাংলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন এক ইঞ্চি জমি ফেলে রাখা যাবে না। প্রতি ইঞ্চি জমিকে কাজে লাগাতে হবে। তার এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে যেসব জমি দুই ফসলের মাঝে পতিত থাকত, কোনো আবাদ হতো না, এবার সেসব জমি আউশের আবাদের আওতায় এসেছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বীজ, সার ফ্রি দেয়া হচ্ছে। যেখানে সরকারি সেচ প্রকল্পের ব্যবস্থা আছে, সেখানে সেচও ভর্তুকির আওতায় আনা হয়েছে। তা ছাড়া এবার বোরো ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক আউশ ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, আউশ আবাদ বৃষ্টিনির্ভর হওয়ায় এ ধান উৎপাদনে সেচ খরচ সাশ্রয় হয়। এবার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আউশ আবাদ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক কৃষককে ৩০ কেজি সার, ৫ কেজি বীজ ও সেচসুবিধা দেয়া হয়েছে। এ কারণে এবার সিরাজগঞ্জের কৃষকরা আউশ চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
সদর উপজেলার কাওয়াকোলা গ্রামের কৃষক শহীদ শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ১২ বিঘা জমিতে বছরে দুটি ফসল আবাদ করতে পারতাম। গত দুই বছর আউশসহ তিনটি ফসল আবাদ করতে পারছি।
‘এতে আর আমার জমি পতিত থাকছে না কখনোই। আউশের আবাদ গত বছরও অনেক ভালো হয়েছে। এ বছরে বৃষ্টি বেশি থাকায় অনেক ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় রোধ করে বৃষ্টির পানি কাজে লাগিয়ে আউশ আবাদ বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। সরকারি প্রণোদনায় বিনা মূল্যে আউশ ধানের বীজ ও সার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
‘সিরাজগঞ্জে যেসব জমি পতিত থাকত, কোনো আবাদ হতো না, এবার সেসব জমি আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। ধানের উৎপাদন কীভাবে বাড়ানো যায়, আমরা সে চেষ্টা করছি। কৃষককেও নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে।’