দেশের বিজ্ঞানীরা রুই মাছের নতুন একটি জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা ২০ শতাংশ বেশি উৎপাদনশীল। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা জেনেটিক গবেষণার মাধ্যমে হালদা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের রুই মাছের মধ্যে সংকর করে এটি উদ্ভাবন করেছেন।
বৃহস্পতিবার এটি সাধারণ চাষীদের জন্য অবমুক্ত করা হয়েছে।
এটিকে তারা বলছেন, চতুর্থ প্রজন্মের রুই মাছ। কারণ এর আগে একই পদ্ধতিতে আরও তিনটি জাত উদ্ভাবন হয়েছে গত এক যুগে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে চতুর্থ প্রজন্মের মাছটির নামকরণ করা হয়েছে 'সুবর্ণ রুই'।
বিএফআরআই থেকে জানা যায়, রুই মাছের নতুন এই জাত দ্রুত বাড়ে। এটি খেতে সুস্বাদু। দেখতে লালচে ও আকর্ষণীয়।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, নতুন উদ্ভাবিত এই মাছ মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণ হলে দেশে প্রায় ৮০ হাজার কেজি মাছ বেশি উৎপাদন হবে।
হ্যাচারিতে উৎপাদিত কার্পজাতীয় মাছে জেনেটিক অবক্ষয় হয়। এছাড়া অন্তঃপ্রজননজনিত সমস্যার কারণে মাছের কঠিন। এ থেকে উত্তরণের জন্যই 'সুবর্ণ রুই' উদ্ভাবন করা হয়েছে।
বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শাহা আলী জানান, তিন নদীর রুই মাছের মধ্যে দ্বৈত অ্যালিল ক্রসিংয়ের মাধ্যমে ৯টি গ্রুপ থেকে প্রথমে বেইজ পপুলেশন তৈরি করা হয়েছে। পরে বেইজ পপুলেশন থেকে সিলেকটিভ ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে ২০০৯ সালে রুই মাছের উন্নত জাতের প্রথম প্রজন্মের মাছ উদ্ভাবন করা হয়।
পরবর্তী সময়ে সিলেকটিভ ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে রুই মাছের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের জাত উদ্ভাবন করা হয়।
সবশেষে ২০২০ সালে উন্নত জাতের চতুর্থ প্রজন্মের জাত উদ্ভাবনে সাফল্য এসেছে।
বৃহস্পতিবার বিএফআরআইয়ের ময়মনসিংহের সদর দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা সভা শেষে নতুন জাতের এ মাছটি অবমুক্ত করা হয় এবং হ্যাচারি-মালিকদের কাছে এই মাছের পোনা হস্তান্তর করা হয়।
ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ বলেন, ‘সুবর্ণ রুই’ মাছ স্বাদু পানি ও আধা লবণাক্ত পানির পুকুর, বিল, বাওড় এবং হাওরে চাষ করা যাবে। এ ছাড়া এ জাতের রেণুপোনা হ্যাচারি থেকে সংগ্রহ করে নার্সারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেকেই লাভবান হতে পারবেন। অর্থাৎ দ্রুত বর্ধনশীল এই মাছটি চাষিদের মুখে হাসি ফোটাবে।