রোজা শেষ হতেই তরমুজের গরম শেষ। ঈদের দিনে পানির দামেও গ্রীষ্মকালীন এই ফল ক্রেতাকে ধরিয়ে দিতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন ধানমণ্ডির বিক্রেতা নেওয়াজ মোল্লা।
রাস্তার পাশে ফুটপাতে দাঁড়ানো এই বিক্রেতাকে বেশ তোপের মুখেও পড়তে দেখা গেছে। এক দিন আগেই যে তরমুজ তিনি বিক্রি করেছেন দুই-তিন শ টাকায়, সেগুলোরই দাম শুক্রবার হাঁকছিলেন ২০ টাকা করে।
তবে এই দামেও আপত্তি আশরাফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতার। ক্ষুব্ধ স্বরে তিনি বলছিলেন, ‘২০ টাকা না, ১০ টাকা হইলে দাও; নাইলে দাঁড়ায়ে দাঁড়ায়ে পচাও তোমার তরমুজ। রোজার ভিতরে তো তরমুজ বেইচ্চা লাল হইছো। ৩০০-৪০০ টাকার নিচে কথা কওন যায় নাই।’
আশরাফুলের ক্ষোভের কারণ, আগুন দামের কারণে রোজার সময়ে ইচ্ছা থাকলেও অনেক দিন তরমুজের দিকে হাত বাড়াতে পারেননি।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আরে ভাই, রোজার ভিতরে দাম জিগাইলেই কইতো তিন শ সাড়ে তিন শ। তরমুজের মইদ্দে লাল, কালা নাকি সাদা তাও কাইটা দেখানোর সময় তাগো ছিল না। তহন ওগো দিন গ্যাছে, এহন আমগো দিন।’
ফুটপাতে দাঁড়ানো মোহাম্মদ আলী নামে একজন আশরাফুলকে শান্ত করার চেষ্টা করেন, ‘যাই হোক ঈদের দিন এই ভাবে বইলেন না।’
আশরাফুলের পাল্টা জবাব, ‘ঈদের দিনই আমাগো দিন। রোজায় মানুষ সারাদিন রোজা রাইখা ফলমূল খায়, তহন অত দাম ওরা দিয়া রাখছিলো ক্যান। ক্যান রোজার দিন দিন না? আপনাগো ট্যাকা আছে আপনাগো সমস্যা নাই। ৬০০ ট্যাকায় তরমুজ খাওনের মুরদ কয়জনের ছিল কইতে পারেন?’
এবার মুখ খোলেন তরমুজ বিক্রেতা নেওয়াজ মোল্লা। অসহয় ভঙ্গিতে বলেন, ‘সব লাভ কি আমরাই রাখছি মামা?? আমগো কিন্না আইন্না ব্যাচন লাগে। যত বেশি লাভ মনে করতাছেন তত না। ২০-৫০ ট্যাকার বেশি লাভ করতে পারি নাই। এর মইদ্দে রোডে খরচ খচ্চা আছে। লাভ যাগো করনের তারা করছে। পুঞ্জিয়ালা (পুঁজি) লাভ করছে। ওগো গিয়ে কন।
‘তহনও আমরা জন (কামলা) বেচছি, আজ ঈদের দিনেও তাই।’