বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হারভেস্টার মেশিনে কৃষকের মুখে হাসি

  •    
  • ৭ মে, ২০২১ ১৬:২৯

‘ইলান যদি আমরারে প্রতি বছর দেয়া হয় তাইলে আমরা বন্যা অওয়ার আগে ধান কাটি ঘরে তুলতে পারমু। ধানের দামও আমরা ভালা ফাইরাম(পাচ্ছি)। সরাসরি গুদামে দিতে না পারলেও মণ প্রতি ৯০০-৯৫০ টাকা দাম ফাইরাম যা গত বছর ফাইছলাম ৫৫০-৬০০ টাকা।’

হাওরের জমিতে ফলানো ধান প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যায়। তাই প্রতি বছরই ধান তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন কৃষকরা।

এ বছর হারভেস্টার মেশিন কৃষকের দুশ্চিন্তার ভার অনেকটাই লাঘব করে হাসি ফুটিয়েছে তাদের মুখে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে এই জেলার ২ লাখ ২৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত হাওরের প্রায় ৯৮ শতাংশ ধানই কেটে ফেলা হয়েছে।

গত বছরের চেয়ে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৩০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ করায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ লাখ ১০ হাজার মেট্রিকটন। গতবারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯৯৩ মেট্রিকটন। উৎপাদন হারের লক্ষ্যমাত্রা এ বছর ৫ দশমিক ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, লক্ষ্যমাত্রার ধানের বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও আধুনিক ধান কাটার মেশিন হারভেস্টার ব্যবহার করায় বন্যার অনেক আগেই কৃষকরা বোরো ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন।

অন্যান্য জেলা থেকে এখানে ধান কাটতে এসেছেন ৯ হাজার ৮৭০ জন শ্রমিক। আর হাওরের ধান কেটেছেন ২ লাখ ৩০ হাজার শ্রমিক।

হারভেস্টিং মেশিনে কাটা হচ্ছে ধান

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফরিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, ধানের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল, জেলার ৭ হাজার কৃষককে বোরো প্রণোদনা ও ৩৫ হাজার কৃষককে হাইব্রিড বীজ সহায়তা দেয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে কৃষকরা যেন সঠিক সময়ে সব ধান কেটে ফেলতে পারেন সেজন্য প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি থাকায় আমরা কোনো সমস্যা ছাড়াই ধান ঘরে তুলতে পেরেছি।’

তিনি জানান, ধান কাটার কাজকে আরও সহজ করে দিয়েছে কৃষির আধুনিক যন্ত্রপাতি। এ বছর ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে ১১৫টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও ১৯টি রিপার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য জেলা থেকে ৬৩টি হারভেস্টার ভাড়া করা হয়েছে ও পুরোনো মেশিন ছিল ১২৯টি।

সুনামগঞ্জের দেখার হাওরের কৃষানি মমিনা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৫ কেয়ার জমিত ধান করছি। এবার কিছু ধান গরমে নষ্ট অইছে তবে বেশির ভাগ ধানই ভালা অইছে। এবার সরকার থাকি মেশিন দিসিল ধান কাটার। তাই আমরা তাড়াতাড়ি ধান কাটছি।

‘ইলান যদি আমরারে প্রতি বছর দেয়া হয় তাইলে আমরা বন্যা অওয়ার আগে ধান কাটি ঘরে তুলতে পারমু। ধানের দামও আমরা ভালা ফাইরাম(পাচ্ছি)। সরাসরি গুদামে দিতে না পারলেও মণপ্রতি ৯০০-৯৫০ টাকা দাম ফাইরাম যা গত বছর ফাইছলাম ৫৫০-৬০০ টাকা।’

এই হাওরের ধান চাষ করা আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘এইবার ধান ভালা অইছে। মেঘও বেশি অইছে না। ধান কাটছিও তাড়াতাড়ি। এখন ধান শুকাইয়া বেছতে পারলে বউ বাচ্চা নিয়া চলতে পারমু। যা ধান অইছে তা মহাজন আর আমি ভাগাভাগি করিয়া নিমু।’

জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের ১১টি উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে ও বাকিগুলোতে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হবে। নির্বাচিত কৃষকরা ১ হাজার ৮০ টাকা দরে সরকারি গুদামে চাল দেবেন। এ বছর সরকার সুনামগঞ্জ থেকে ২৯ হাজার টন ধান কিনবে।

ডিসি কৃষকদের অনুরোধ করেন, এই কৃষকরা যেন দালালের মাধ্যমে না দিয়ে সরাসরি এসে ধান বিক্রি করেন।

এ বিভাগের আরো খবর