পাট চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের প্রণোদনা সময়মতো পাচ্ছে না ফরিদপুর অঞ্চলের চাষিরা। তাদের অভিযোগ প্রতিটি ইউনিয়নে গুটি কয়েক চাষির মাঝে দেয়া হয়েছে এই প্রণোদনা। বঞ্চিত রয়েছে সিংহভাগ।
পাট উৎপাদনে শীর্ষে থাকা ফরিদপুর জেলায় দেশের সেরা মানের পাট উৎপন্ন হয়। চলতি মৌসুমে জেলায় ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এ পর্যন্ত জেলার লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশ পাট চাষ সম্পন্ন হয়েছে। আর অল্প কিছু দিনের মধ্যে শেষ হবে চাষের মৌসুম।
জেলার পাট অধিদপ্তর জানায়, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় জেলার প্রতিটি উপজেলায় ২ হাজার ৫ শ চাষির মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে পাট বীজ ও সার বিতরণ করা হচ্ছে।
সরকার পাট অধিদপ্তরের জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকতাদের মাধ্যমে চাষিদের বিঘাপ্রতি ১ কেজি উন্নত মানের বীজ ও তিন প্রকারের (টিএসপি, ইউরিয়া ও এমওপি) ১২ কেজি সার বিনা মূল্যে দিচ্ছে। কিন্তু পাট চাষের মৌসুম শেষ হতে চললেও জেলা ৯ উপজেলার মধ্যে চারটিতে এখনও ওই প্রণোদনা দেয়া শেষ হয়নি।
জেলার অধিকাংশ পাটচাষি বলছেন, প্রণোদনা তাদের হাতে পৌঁছায়নি। বাধ্য হয়ে বাজারে পাওয়া বেশি দামের বীজ কিনে চাষ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠে গিয়ে কথা হয় পাটচাষি কবির শেখ, হানিফ শেখ, ছগির শেখ ও হাফেজা বেগমের সঙ্গে।
তাদের অভিযোগ, প্রকৃত পাটচাষিরা সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের লোকদেরই সরকার যাবতীয় সুযোগসুবিধা দিয়ে থাকে। তাদের দাবি কৃষকের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি যেকোনো প্রণোদনা সঠিকভাবে বণ্টন করা হোক।
চাষিরা আরও বলেন, পাট অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা চাষিদের কাছে আসেন না, তারা ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছ থেকেই চলে যান।
ফরিদপুর জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা তারেক মো. লুৎফর আমিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা জেলায় ২ হাজার ৫০০ চাষির মধ্যে সরকারি প্রণোদনা দিচ্ছি। ইতোমধ্যে জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে পাঁচটিতে সরকারি প্রণোদনা দেয়ার কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া অন্য চার উপজেলার কাজ চলমান।’
তিনি জানান, প্রত্যেক উপজেলায় প্রণোদনা বণ্টনের কমিটি রয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়ম হলে তারাই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হয়রত আলী বলেন, ‘চাষিদের যেকোনো প্রণোদনা সময়মতো দেয়া দরকার, যাতে তারা সঠিক সময়ে ব্যবহার করতে পারে।’