স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষে পাটবীজে ভর্তুকি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
‘পাটবীজের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।
মন্ত্রী বলেন, পাটবীজের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীল না থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হবে। পাটবীজে কৃষকদের আগ্রহী করতে ও কৃষকেরা যাতে চাষ করে লাভবান হয় সেজন্য প্রণোদনা বা ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হবে। পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে ‘একটি সমন্বিত প্রকল্প’ নেয়ার কাজ চলছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম সভা সঞ্চালনা করেন। আলোচনায় অন্যান্যের মাঝে অংশ নেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন তালুকদার ও হাসানুজ্জামান কল্লোল, মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী উদ্যোগে পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছে। সেই জিনোম ব্যবহার করে দেশের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল পাটের জাত উদ্ভাবন করেছেন; যার ফলন ভারতের পাটজাতের চেয়ে অনেক বেশি। কৃষক পর্যায়ে এসব পাটজাতের চাষ জনপ্রিয় করতে পারলে বীজেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব।
পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, সম্প্রসারণকর্মী ও বিজ্ঞানীদের শিগগির স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান মন্ত্রী।
সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম বলেন, পাটবীজ চাষের জন্য জমির স্বল্পতা রয়েছে। এক্ষেত্রে পরিত্যক্ত সুগার মিলের জমি পাটবীজের উৎপাদন কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ বিষয়েও উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সভায় জানানো হয়, দেশে বর্তমানে উৎপাদিত পাটের ৮৫ ভাগই তোষা জাতের। এ পাটবীজের চাহিদার প্রায় ৮৫-৯০ ভাগ আনতে হয় ভারত থেকে। বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ৫ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।
আগামী ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৫-২৬ এই ৫ বছরের মধ্যে দেশে ৪ হাজার ৫০০ টন পাটবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উচ্চমূল্যের রবি ফসলের পরিবর্তে কৃষক পাটবীজ উৎপাদনে তেমন আগ্রহী হয় না। দেখা গেছে, তোষা পাটবীজ চাষ করে একর প্রতি কৃষকের নিট লাভ ৪৮ হাজার টাকা, যেখানে ফুলকপি চাষে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, বাঁধাকপি চাষে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিট লাভ হয়।
তাই পাটবীজ উৎপাদনের পরিবর্তে বাজার থেকে বীজ কিনে পাট চাষ লাভজনক বলে মনে করেন কৃষক।