বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নতুন ধানে চালু হচ্ছে বন্ধ চালকল

  •    
  • ২০ এপ্রিল, ২০২১ ২০:২৬

কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন সাধু বলেন, ‘একমাস আগেই থেকেই মোকামে ধান পাচ্ছিলাম না। মিল বন্ধ হলে এখানকার ১০ থেকে ১২ হাজার দিনমজুর বেকার হয়ে পড়েন।’

এক মাস বন্ধ থাকার পর নতুন ধানে আবার চালু হচ্ছে কুষ্টিয়ার চালকলগুলো। মিল মালিকরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই পুরোপুরি চালু হবে চালকলগুলো। তখন কাজ ফিরে পাবেন বেকার হয়ে পড়া শ্রমিকরা, একই সঙ্গে কমে আসবে চালের দামও।

ধান সংকটে চলতি বছরের মার্চ থেকে মিলগুলো বন্ধ হতে শুরু করে। মিলের প্রায় সব কার্যক্রম এপ্রিলে বন্ধ হয়ে যায়। তবে নতুন ধানে গত তিন দিনে চালু হয়েছে ১০-১২টির মতো চালকল।

কুষ্টিয়ার খাজানগরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধান-চালের মোকাম। এখানে প্রায় সাড়ে ৩শ চালকল রয়েছে। এর মধ্যে বড় অটোরাইস মিল রয়েছে ৫৫টি। বাকি সব হাসকিং মিল। এসব মিলের সঙ্গে রয়েছে ধান শুকানোর চাতাল। এখানে সব মিলিয়ে কাজ করেন প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক।

এ বছর মৌসুমের শেষের দিকে ধান সংকটে বন্ধ হয়ে যান চালকলগুলো। লকডাউন দেয়ার পর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে বেকার হয়ে পড়েন শ্রমিকরা। মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেকেই।

খাজানগর এলাকায় দেখা যায়, ফাঁকা পড়ে আছে চাতাল ও গোডাউন। শ্রমিকদের সেই কোলাহল নেই। অনেককে বসে লুডু খেলতে দেখা যায়। যে কয়েকটি মিল চালু হয়েছে সেখানেও পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়নি। উৎপাদন বন্ধ হতে থাকায় মোকামটি থেকে চাল সরবরাহ কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে।

বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কুষ্টিয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মৌসুমে যেখান থেকে ৩০০ ট্রাক চাল যেত দেশের বিভিন্ন এলাকায়, সেখানে গত সপ্তাহে ২/৩ ট্রাক মালও যায়নি।’

সংগঠনটির কুষ্টিয়ার সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, ‘এবার মার্চ -এপ্রিলে বাজারে খুব একটা ধান পাওয়া যায়নি। ধানের সংকট ছাড়াও এলসির মাধ্যমে চাল আমদানির কারণে মিলগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ভারত থেকে আসা চালের দামে সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকেই মিল বন্ধ রাখেন।’

সোমবার রাতে ওমর ফারুক জানান, গত দুই-তিন দিনে কিছু ধান এসেছে হাওরাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চল থেকে। এ দিয়ে মিল ১০-১২টির মতো চালু হয়েছে। শুরুর দিকে মিনিকেট ধান কেনা পড়ছে ১ হাজার ২০০ টাকার ওপরে। চাল কত দামে বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিক্রি নেই, কারণ এখনও উৎপাদনই হয়নি। কেবল মেশিনে ধান দেয়া হয়েছে। এখনও চাল বের হয়নি।’

মঙ্গলবার একই কথা বললেন ফোর স্টার রাইস মিলের পরিচালক শরিফুল ইসলামও।

তিনি বলেন, ‘নেত্রকোণা ও যশোর থেকে গত তিন দিনে কিছু ধানের ট্রাক এসেছে। নেত্রকোণা থেকে আসা হাওরের ধান কিছুটা ভেজা রয়েছে। এগুলোর দাম পড়ছে মণপ্রতি ১ হাজার টাকা। যশোর থেকে আসা ২৮ ধানের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা মণ।

চালের দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু দিন উৎপাদন নেই, তাই কোনো ক্রেতাই আসেনা। এর আগে মিলগেটে ভাল মিনিকেট চাল প্রতি বস্তা (৪০ কেজি) ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে।’

কুমিল্লা রাইস মিলের ব্যবসায়ী মো. হান্নান বলেন, ‘সুবর্ণ অটো, মমিন অটো, গুরুর দান, দাদা অটো, ফ্রেশ এগ্রো, নুর এগ্রো, তানিয়া এগ্রো, সালাম অটোসহ ১০ থেকে ১২টি অটো রাইস মিল চালু হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হাসকিং মিল চালু হয়নি।’

কুষ্টিয়া চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন সাধু বলেন, ‘একমাস আগেই থেকেই মোকামে ধান পাচ্ছিলাম না। মিল বন্ধ হলে এখানকার ১০ থেকে ১২ হাজার দিনমজুর বেকার হয়ে পড়েন।’

তিনি বলেন, ‘হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধানের কয়েক গাড়ি চালানও এসেছে। আস্তে আস্তে মিলগুলো চালু হবে।’

এদিকে বন্যার আশঙ্কায় আগেভাগে ধান কেটে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি বিভাগ।

শনিবার দেয়া এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৮০ ভাগ পেকে গেলেই কাটতে হবে ধান। এই সতর্কতার পর হাওরে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন।

কুষ্টিয়া সদরের বারখাদা এবং বিত্তিপাড়া এলাকায় কিছু চাষী তাদের আগাম ধান কাটা শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, পুরোপুরি বোরো ধান কাটা শুরু হতে সময় লাগবে আরও ১২ থেকে ১৫ দিন।

এ বিভাগের আরো খবর