বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কৃষি গবেষণায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ২২:৩৮

‘যার ফলে আজকে কৃষক খুব অল্প কষ্টে অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন, ধান উৎপাদন করতে পারছেন, গম করছেন, ভুট্টা করছেন এবং সব ধরনের ফসল উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং তা বাজারজাত করার ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি।’

বর্তমান সরকার কৃষি গবেষণায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতে কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি গবেষণার ওপর। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকেই কৃষি গবেষণায় আমরা গুরুত্ব দিই। আজকে গবেষণার ফলে আরও নতুন নতুন ধরনের ফসল উৎপাদন, তরি-তরকারি, ফল-মূল এবং দানাদার খাদ্যশষ্য থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য যেন উৎপাদন হতে পারে তার জন্য ব্যাপক হারে গবেষণা হচ্ছে এবং উন্নতমানের বীজ আমরা সরবরাহ করছি।

‘যার ফলে আজকে কৃষক খুব অল্প কষ্টে অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন, ধান উৎপাদন করতে পারছেন, গম করছেন, ভুট্টা করছেন এবং সব ধরনের ফসল উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং তা বাজারজাত করার ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি।’

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের সব যন্ত্র কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে বলেও জানান সরকার প্রধান। বলেন, ‘যান্ত্রিকীকরণের জন্য হারভেস্টার থেকে শুরু করে সব ধরনের যন্ত্র আমরা ধীরে ধীরে কৃষকের হাতে পৌঁছে দিব। এবং আমাদের দেশের কৃষিটাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি এবং কৃষিভত্তিক অর্থনীতি আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং কৃষি অর্থনীতির সাথে সাথে আমরা শিল্পের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছি। কারণ উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা এবং দেশে-বিদেশে পণ্য যেন আমরা রপ্তানি করতে পারি তার ব্যবস্থা করে কৃষককে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা দিয়ে যাচ্ছি।’

দেশ ডিজিটাল হওয়ার সুবিধা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। কৃষক একটা মোবাইল ফোন ধরে ছবি তুলে তার ফসলের কী অবস্থা, মাটির কী অবস্থা বা মাটি পরীক্ষা করা এবং কী ধরনের সার ব্যবহার করবেন, কতটুকু ব্যবহার করবেন বা কীটনাশক ব্যাবহার করবেন কিনা বা কতটুকু করবেন, সব পরিমাণ যাতে পেতে পারে, সেই ধরনের কৃষিতথ্য যাতে তারা পেতে পারেন, সে তথ্যকেন্দ্রসমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলেছি।

‘সেখান থেকে কৃষক তার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। কারণ আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর মোবাইল ফোনও আমরা সকলের হাতে হাতে তুলে দিয়েছি।’

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে কৃষিই উন্নয়নের সবচেয়ে বড় মাধ্যম বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাংলাদেশের সকল কৃষক-কৃষাণিকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। কারণ, তারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্য উৎপাদন করেন। সেই খাদ্য খেয়েই আমরা বেঁচে থাকি।

‘কাজেই তাদের প্রতি আমাদের সব সময় সমর্থন রয়েছে এবং তাদের সহযোগিতা করা, আমরা বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের কর্তব্য মনে করে।’

বিএনপি-জামায়াতের শাসনের সময় সারের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনে গুলিতে ১৮ জন নিহত হওয়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখন থেকে কৃষকদের আর কোনো কষ্টে থাকতে হয়নি, কারণ আমরা তাদের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি।

‘বর্গাচাষিরা যাতে বিনা জামানতে ঋণ পান, আমরা কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সারের দাম যা বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, তা আজ ১২ টাকায় আমরা নামিয়ে এনেছি। গবেষণার মাধ্যমে উন্নত বীজ আমরা উৎপাদন করছি এবং সেই বীজ আমরা সরবরাহ করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেই সাথে সাথে কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ, যেটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল, আমরা সেই লক্ষ্য কার্যকর করে দিচ্ছি এবং সেখানে আমরা ৭০ শতাংশের ওপর ভর্তুকি দিচ্ছি, এবং আমরা কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ করে যাচ্ছি যাতে আমাদের কৃষকরা আরও অধিক পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে।

‘আমরা উন্নত মানের বীজ সরবরাহ এবং প্রতিটি কৃষি-উপকরণ কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেই সাথে সাথে আমরা সেচ কাজে কৃষক যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, সেখানে আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি এবং কৃষকের বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে নিশ্চিত হয় তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং বর্তমানে সেচ কাজে আমরা সোলার-প্যানেল ব্যবহারও শুরু করে দিয়েছি।’

শস্যের ন্যায্য মূল্য যাতে কৃষকরা পান, এ জন্য দাম নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘কৃষকের গুদামে যাতে খাদ্য সংরক্ষিত থাকে, প্রত্যেক কৃষকের ঘরে খাদ্য যেন থাকে, কারণ যারা উৎপাদন করবে, তারা খাবার পাবেন না বা তাদের ছেলে-মেয়েরা খাদ্য কষ্ট পাবে, এটা হতে পারে না।

‘আমরা সে ব্যবস্থাটাও সঙ্গে সঙ্গে হাতে নিয়েছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে সমস্ত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং সেই সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এবারেও যেমন ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, তারাও সে ধরনের সহযোগিতা পাবেন, তার জন্য একটা থোক বরাদ্দ আমরা রেখে দিচ্ছি। আমাদের দেশে উৎপাদন যাতে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ হতে পারে, তার জন্য যথাযথ মাটি পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।’

এ সময় সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমার দুঃখ একটাই, করোনা ভাইরাসের কারণে আমি নিজে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পাড়লাম না। সকলের সাথে দেখাও আমার হলো না।

‘প্রতি বছর আমরা কৃষকলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করি। তবে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, গার্গল করা, ভাপ নেয়া, যেখানে বেশি জনসমাগম, সেখানে না যাওয়া, দূরত্ব বজায় রেখে চলা এবং আমরা যে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার নির্দেশাগুলো দিয়েছি, অবশ্যই সে নির্দেশনাগুলো মেনে নিয়ে নিজেকে আপনারা সুরক্ষিত রাখুন, অপরকে সুরক্ষিত করুন এবং এই করোনাভাইরাসের হাত থেকে যেন দেশ ও জাতি মুক্তি পায়, তার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে সবাই দোয়া করেন, বাংলাদেশ এই মহা দুর্যোগ থেকে যেন দ্রুত মুক্তি পেতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর