পদ্মায় পানি স্বল্পতার কারণে সরবরাহ শূনে্য নামার পর আবার পুরোদমে চালু হয়েছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প।
দেশের বৃহত্তম এ সেচ প্রকল্পের পানি সরবরাহ ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় শূন্যে নেমে আসে। এরপর এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল সেচ সুবিধা।
প্রকৌশলীরা ২ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে স্বল্পমাত্রায় পাম্প চালু করেন। শূন্য থেকে ধীরে ধীরে পানি সরবরাহ ১৩.২৫ মিটার আরএল (রিডিউসড লেভেল) পর্যন্ত হয়।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পাম্প হাউজের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে ডিসচার্জ চ্যানেলে ১৪.৫ মিটার আরএল পানি সরবরাহ হচ্ছে। এটিই সর্বোচ্চ সরবরাহ। এই লেভেলে পানি গেলে প্রকল্পের প্রধান খাল থেকে সব শাখা এবং প্রশাখার শেষপর্যন্ত পানি পাবে কৃষক।
পদ্মা নদী থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় চ্যানেলের মাধ্যমে পানি এনে পাম্পের মাধ্যমে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার কৃষকদের জন্য সরবরাহ করা হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
প্রকৌশলী মিজানুর আরও জানান, ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় কালবৈশাখী ঝড়ে একটি পাম্প বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেটি ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় চালু করা গেছে।
যৌথ নদী কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এখন গ্যারান্টিযুক্ত ৩৫ হাজার কিউসেক (প্রতি সেকেন্ড ১ ঘনফুট) পানি পাচ্ছে। ১ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে বাংলাদেশ। গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি অনুযায়ী, আগের ১১ দিন ভারত ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি নিয়েছে। সে সময় বাংলাদেশ পেয়েছিল ২৩ হাজার ৫৪৪ কিউসেক পানি।
পাবনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, ৫ এপ্রিল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পাওয়া গেছে ৩৫ হাজার ৯৪৬ কিউসেক।
কুষ্টিয়া অঞ্চলের চার জেলায় কৃষি জমিতে সেচ সুবিধার জন্য জিকে প্রকল্পের পাম্প দুটি গত ১৫ ও ১৭ জানুয়ারি চালু করা হয়। এ প্রকল্পের আওতায় বোরো মৌসুমে এবার কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ও ঝিনাইদহে ১৯৪ কিলোমিটার প্রধান খালের মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
পাম্প আবার চালু হওয়ায় খুশি কৃষকরা। কুষ্টিয়া সদরের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ক্যানেলে পানি আইছে। আস্তে আস্তে বাড়ছে। পানি থাকলে বোরো ধান বাঁচানো যাবে।’