নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের চত্বরে এখন আর কোনো খালি জায়গা নেই। ভরে গেছে সবজি ও ফলের গাছে। সেই সঙ্গে আছে বাহারি ফুলের বাগানও।
শুধু সবজি ও ফুলই নয়। অফিসের পানি বের হওয়ার ড্রেনেজ লাইনে চাষ হচ্ছে তেলাপিয়া, শিং, মাগুর, কই, খলিশা ও সরপুঁটির।
এই ব্যতিক্রমী কাজের উদ্যোক্তা অফিসের সহকারী পরিচালক শওকত কামাল। স্টাফদের নিয়ে প্রতিদিন তিনি এগুলোর যত্ন করেন। উৎপাদিত সবজি ও মাছ নিজেদের জন্য কিছুটা রেখে বাড়তিটা বিলিয়ে দেন দরিদ্রদের মাঝে।
নওগাঁ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ফুলের বাগান। ছবি: নিউজবাংলা
শওকত কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস শুরুর আগে অফিস চত্বরের জায়গা খালি পড়ে ছিল। তারপর শুরু হলো মহামারি। এই সংকট মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, “এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে”। এক জন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমিও শামিল হয়েছি তার ঘোষণা বাস্তবায়নে।’
অফিস চত্বরের ১০ কাঠা জমিতে গত বছরের ২০ মার্চ থেকে চাষাবাদ শুরু করেন। লাগিয়েছেন লালশাক, ডাঁটাশাক, ঢ্যাঁড়শ, করোলা, সিম, বেগুন, বরবটি, রসুন, পেঁয়াজ, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, কদর, লাউ, পেঁপে, লেবু, টমেটো, কাঁচা মরিচ, আমলকী, পেয়ারা, আম, জাম, আতা, বড়ই, ড্রাগন ফলের গাছ।
পাসপোর্ট অফিসে লাগানো গাছে ধরে আছে ফুলকপি। ছবি: নিউজবাংলা
শওকত বলেন, ‘আমরা যেমন ফরমালিনমুক্ত ফ্রেশ সবজি পাচ্ছি তেমনি আশপাশের মানুষদেরও দিচ্ছি। সেবাগ্রহীতাদেরও উৎসাহ দিচ্ছি যাতে বাড়ির পাশে জায়গা খালি না রেখে সবজি চাষ করে। এতে খরচ বাঁচার পাশাপাশি বাড়তি আয়ও হবে।’
নওগাঁর রাণীনগর থেকে পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি তো অফিসে এসে অবাক হয়ে গেছি। পাসপোর্ট অফিসে ফুল, সবজি, মাছ তো কোথাও দেখিনি। এই উদ্যোগ আসলেই প্রশংসার যোগ্য।’
সদর উপজেলার রুবেল হোসেনও এসেছেন পাসপোর্টের কাজে। তিনি বলেন, ‘আমি অফিসের চারপাশ ঘুরে ঘুরে দেখলাম। দেখে মনে হলো কোনো কৃষিখামার দেখছি। দেখে সত্যিই অনুপ্রাণিত হলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাড়ির চারপাশে অনেক জমি পতিত থাকে। সেগুলোতেও এমন উদ্যোগ নিলে সংসারে বাড়তি আয়ের উৎস হতে পারে।’