কক্সবাজারের সদর উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের কৃষকেরা একসময় তাদের জমিতে চাষ করতেন বিষাক্ত তামাক। সেসব জমিতে এখন দেখা মিলছে মিষ্টি বাউকুলের।
অল্প সময়ে দ্বিগুণ লাভ দেখে ঈদগড়ের বহু চাষি তামাক চাষ ছেড়ে বাউকুল চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।
ঈদগড়ের মিষ্টি বাউকুলের সুনাম এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাউকুল চাষ করে এখন অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন। অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
জেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর ঈদগড়ে ১৬ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে বাউকুল। প্রতি হেক্টর জমিতে ৭২০টি বাউকুল গাছের চারা রোপণ করা যায় ।
প্রতি হেক্টর জমিতে বাউকুল চাষে খরচ হয় ৯ লাখ টাকা। এক হেক্টর বাউকুল গাছ থেকে চাষিরা ৩৫-৪০ মেট্রিক টন কুল সংগ্রহ করেন, যার বাজারমূল্য ১৮ লাখ টাকা।
সুনাম ছড়িয়ে পড়ায় ঈদগড়ের বাউকুল বাগান থেকে কুল কিনছে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনও।
বাউকুল বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত এক কৃষকবাউকুল চাষি নুরুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাউকুল চাষ লাভজনক দেখে আমরা দুই বন্ধু আগ্রহী হয়ে ঈদগড়ের বড়বিল এলাকায় ৫ একর জায়গায় প্রথমে কয়েক শ বাউকুল গাছের চারা রোপণ করি।
‘সেখানে বাউকুল মৌসুমে দেখি প্রচুর পরিমাণে কুল ধরেছে। সেগুলো বিক্রি করে কয়েক লাখ টাকা লাভ হয়। পরে আরও বেশি পরিমাণ জমিতে বাউকুল চাষ করি। বর্তমানে আমরা বাউকুল বাগান থেকে প্রতিবছর দ্বিগুণ টাকা লাভ করছি।’
জেলার প্রথম বাউকুল চাষের উদ্যোক্তা রহিম উল্লাহ জানান, বাউকুল চাষে লাভ দেখে বেকার যুবকরা এই ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে অনেকে এই ফল চাষ করতে পারছেন না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বেকারদের সংঘবদ্ধ করে বাগান করার উদ্যোগ নিলে তারা উপকৃত হতেন।
ঈদগড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি নুরুল আলম বলেন, ‘ঈদগড়ে বাউকুল চাষ করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাউকুল চাষের আরও প্রসার ঘটবে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, (ভারপ্রাপ্ত) মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ‘তামাকের চেয়ে কৃষকরা বাউকুল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন, যার কারণে বাউকুলের চাষ বাড়ছে। এই বাউকুল চাষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বেকার যুবকদের উদ্বুদ্ধ করছে।’