বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কৃষি গবেষকদের প্রণোদনার পথ খুঁজছেন প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৪:০৯

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণায় যারা সম্পৃক্ত থাকেন, কিন্তু সরকারি চাকরি তাদের জন্য সমস্যা। এই জন্য একটা কথা সকলের কাছে চেয়েছি। কিন্তু কেউ সুরাহা করতে পারেনি যে এই গবেষকদের আমরা কীভাবে প্রণোদনা দিতে পারি বা গবেষণা কাজে তারা যেন গবেষণার ফসলটা না পাওয়া পর্যন্ত থাকতে পারেন সেটা আমরা কীভাবে করতে পারি।’

দেশের কৃষি গবেষকদের কীভাবে প্রণোদনা দেয়া যায়, তার উপায় খুঁজছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রকাশিত ১০০ কৃষি প্রযুক্তি এটলাস-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গবেষণার সঙ্গে যারা জড়িত, আসলে আমি বহুবার এ সম্পর্কে আলোচনা করেছি যে, যারা গবেষণায় সম্পৃক্ত থাকেন, গবেষণা এমন একটা জিনিস এটা একদিনে শেষ হয়ে যায় না। অনেক সময় দীর্ঘ সময় গবেষণা করতে হয়। কিন্তু আমাদের সরকারি চাকরির একটি নিয়ম আছে।

‘একটা বয়স নির্ধারণ করা আছে। এরপরে আর চাকরি করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘গবেষণায় যারা সম্পৃক্ত থাকেন, কিন্তু সরকারি চাকরি তাদের জন্য সমস্যা। এই জন্য একটা কথা সকলের কাছে চেয়েছি। কিন্তু কেউ সুরাহা করতে পারেনি যে এই গবেষকদের আমরা কীভাবে প্রণোদনা দিতে পারি বা গবেষণা কাজে তারা যেন গবেষণার ফসলটা না পাওয়া পর্যন্ত থাকতে পারেন সেটা আমরা কীভাবে করতে পারি। বহুবার এটা নিয়ে চিন্তা করা হয়েছে।’

গবেষকদের প্রণোদনা দেয়া নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আগেও আমরা একটা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। কিন্তু দেখা গেল গবেষকদের জন্য যে সুযোগটা দিতে চাই, সেখানে যারা কাজ করেন সবাই সমানভাবে সেই সুযোগটা চান। সেই অফিসের পিয়ন, আরদালি, দারোয়ান থেকে শুরু করে কেউই আর বাদ যায় না। এটা তো হয় না; এটা তো সম্ভব না।

‘এটাই হচ্ছে আমাদের দেশের সমস্যা। অথচ যারা গবেষণা করবেন, তারা যেন সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে গবেষণাটা করতে পারেন, আর গবেষণায় যেন লিপ্ত থাকতে পারেন সেটা কীভাবে করা যেতে পারে? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেখানে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না।

‘কিন্তু ইনস্টিটিউটগুলিতে আমরা কীভাবে এই প্রণোদনাটা দিতে পারি, আপনাদের কাছে এই পরামর্শটা চাই। কারণ আমি চাচ্ছি আমাদের যারা কৃষি গবেষক তাদের আরও সুযোগ দিতে।’

পথ খোঁজার দায়িত্ব গবেষকদের ওপরই ছেড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমার বাবার মতোই চিন্তা করি। আমার দেশ কৃষিপ্রধান দেশ। শুধু আমার দেশই না, সারা বিশ্বেই কৃষি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারন এটা খাদ্য; এটা লাগবেই। এই বাজার কখনো সংকুচিত হবে না।

‘সেই খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা, মানসম্মত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রাখা। আমাদের বিজ্ঞানীদের জন্য কিছু করা দরকার। সেটা কীভাবে করা যায় যে শুধু বিজ্ঞানীরাই এই প্রণোদনাটা পাবেন। তার একটা চিন্তা-ভাবনা করার দায়িত্ব আপনাদের দিলাম। আপনারা বলেন আমি সব করতে রাজি আছি। কারণ আমাদের দেশটা যেহেতু কৃষিনির্ভর, কৃষিকেই আমরা গুরুত্ব দিতে চাই।’

সরকার কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিভিন্ন অঞ্চলে আমরা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করছি। এর কারণ আমরা মনে করি, এগুলো হলে আমাদের গবেষণা যত বাড়বে তত বেশি আমরা কৃষি পণ্য উৎপাদন করতে পারব, মানও ঠিক থাকবে।

‘আমরা বীজ রক্ষণাগার তৈরি করছি। খুব শিগগিরই এটি সম্পন্ন হবে। এ ছাড়াও নরওয়েতে আমরা কথা বলছি। সেখানেও কিছু বীজ সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে।’

ফসল উৎপাদনে জোন ম্যাপিংয়ের তাগিদ

কৃষিপণ্য মানসম্মত করতে সারাদেশে আরও পরীক্ষাগার নির্মাণের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষিপণ্য যেন মানসম্মত করা যায় এর জন্য পরীক্ষাগার আরও তৈরি করা দরকার। সেই সাথে আমাদের অঞ্চলভিত্তিক পরীক্ষাগার আরও প্রয়োজন।

‘দেশের মাটির উর্বরতা ও পরিবেশ বিবেচনা করে আমাদের কোন অঞ্চলে কোন ফসল সবচেয়ে ভালো ও বেশি উৎপাদন হয় এবং উন্নতমানের উৎপাদন হতে পারে, তারও একটা জোন ম্যাপ করা দরকার। এই ম্যাপিংটা খুব বেশি প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশটা একটা বদ্বীপ। আমরা দেখেছি, একেক অঞ্চলে কিন্তু একেক জিনিস ভালো হতে পারে। আমরা অল্প খরচে অধিক মাত্রায় উৎপাদন কীভাবে করতে পারি, সেগুলো বিবেচনায় এসে সমগ্র বাংলাদেশের একটা আলাদা গবেষণা দরকার এবং জোন ভাগ করে দেয়া দরকার।

‘যেহতু আমাদের পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে, দেশীয় বাজার আমাদের যেমন বাড়ছে, আবার বিদেশেও আমরা যেন রপ্তানি করতে পারি। এভাবে করতে পারলে আমরা হয়তো আরও উন্নতি করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১০০ অঞ্চল করছি সারা দেশে, সেটা হচ্ছে শিল্পাঞ্চল। আমার চিন্তায় আছে এটা যে, ওইসব অঞ্চলে কী ধরনের কাঁচামাল আমরা উৎপাদন করতে পারি। বিশেষ করে কৃষিপণ্য। ওই কৃষিপণ্যটা যাতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যায় বা প্রক্রিয়াজাত করা যায়, যা আমি বিদেশেও রপ্তানি করতে পারি।

‘সেই সব অঞ্চলে যদি সেই ধরনের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের ব্যবস্থা করি তাহলে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষেরও যেমন আর্থিক কষ্ট থাকবে না, আর্থিকভাবে আমরা যেমন আরও স্বচ্ছল হতে পারব। আর রপ্তানিযোগ্য পণ্য আমাদের বৃদ্ধি পাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষ যেহেতু এখন ধীরে ধীরে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হচ্ছে, ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে। যখনই কোনো কিছু উৎপাদন করব মনে রাখতে হবে দেশের বাজার বাড়াতে হবে। অর্থাৎ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা যেন বিদেশেও রপ্তানি করতে পারি, সেইভাবেই পণ্য উৎপাদন করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর