দাম কিছুটা কম পেতে মাঠে থাকতেই সবজি কিনে রাখেন অনেক কাঁচামাল ব্যবসায়ী। এ বছরও এভাবে বাঁধাকপি কিনেছিলেন বরিশালের ব্যবসায়ীরা।তবে বাঁধাকপির দাম হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এসব ব্যবসায়ী।
ফলন বেশি হওয়ায় পড়ে গেছে সবজিটির দাম। এক মাস আগেও যেই বাঁধাকপির দাম ছিল কেজি প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। পাইকারি বাজারে সেই বাঁধাকপিই এখন বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ৯ টাকায়। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
বরিশালের সাধারণ মানুষও এখন বাঁধাকপি তেমন একটা কিনতে চাচ্ছেন না। এ কারণে অনেক পাইকারি ব্যবসায়ী বাঁধাকপি কেনা-বেচা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে বাঁধাকপি ব্যবসায়ীদের অসহায়ত্ব। যে টাকা পাচ্ছেন তাতেই বিক্রি করে বাড়ি ফিরছেন তারা।
মেহেরপুর থেকে পাইকারি বাজারটিতে বাঁধাকপি বেচতে আসা আজাদ কালু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেহেরপুর থেইকে এখানে যে কপি এনেছি, তার একটাই আমাদের কিনা পড়েছে ১০ টাকা করে। এখন বাজারের দাম হিসেবে বিক্রি করতে হচ্ছে ৪ থেকে ৫ টাকা করে।
‘আমাদের মহাজনরা কয়েক বিঘে বাঁধাকপি ক্ষেত কিনেছে। প্রতি বিঘের দাম ৫০-৬০ হাজার টাকা। প্রত্যেক বিঘেয় চার হাজার মতোন কপি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে এক বিঘের কপি বিক্রি করলি আমাদের লাভ থাইকতো প্রায় এক লাখ টাকা। কিন্তু এবার পুরো লুকসান।’
মেহেরপুর থেকে ট্রাকে করে বাঁধাকপি আনতে ভাড়া পড়ে ১০ হাজার টাকা। লেবার খরচ ৫ হাজার ও বাজারের কমিশন ৫ হাজার টাকা। ৫০ হাজার টাকার পণ্য আনতে ২০ হাজার টাকাই চলে যায় নানা খরচে।
মাসখানেক আগেও এক ট্রাক বাঁধাকপির দাম ছিল ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। কিন্তু এখন মাল আনার খরচই ঠিকমতো উঠছে না।
বরিশালের বাংলাবাজার এলাকার কাঁচামাল ব্যবসায়ী ছত্তার হাওলাদার বলেন, ‘বান্দাকপি এহন আর রাহি না। ওয়া মাইনষে কেনতে চায় না। খাইতে খাইতে আউম্মা দেছে। এর লইজ্ঞা বেচা-বিক্রি কম। তয় অন্য সবজির মোডামুডি বিক্রি আছে।’
বরিশালে পাইকারি সিটি মার্কেটের দুলাল বানিজ্যালয়ের মালিক আমিনুল ইসলাম শুভ বলেন, ‘মাসখানেক আগেও মোটামুটি ভালো দাম ছিল। কিন্তু সপ্তাহ ধইরা বাঁধাকপির দাম নেমে গেছে। আমরাও কম করে রাখি।
‘খুচরা বাজারে দামে আগের থেকে প্রায় ২০ টাকার পার্থক্য। ফলন বেশি পাওয়ায় বাঁধাকপির বাজারে এমন মন্দা।’