১০০ বিঘা আয়তনের বিশাল মাটির ক্যানভাস। তাতে বোনা হচ্ছে সোনালি ও বেগুনি রঙের দুই প্রজাতির ধান।
কয়েক ধাপে পরিকল্পিত ও শৈল্পিক চাষের ভেতর দিয়ে সেখানে ফুটে উঠবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।
কৃষিজমিকে ক্যানভাস হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির ফসলের সুবিন্যাস্ত চাষের মাধ্যমে সৃষ্ট এ ধরনের শিল্পকর্ম পরিচিত ক্রপ ফিল্ড মোজাইক বা শস্যচিত্র হিসেবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদ’।
শুক্রবার বালেন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোমেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টির সার্বিক দিক নিয়ে কথা বলেন উদ্যোক্তারা। তারা জানান, শস্যচিত্রটি পুরো অবয়ব পেলে তা হবে আকার-আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্যচিত্র।
শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে ফসলের মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি গড়তে রোপন করা হয়েছে ধানের চারা
গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্য অনুসারে ২০১৯ সালে চীনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শস্যচিত্রটি তৈরি করা হয়। যার আয়তন ছিল আট লাখ ৫৫ হাজার ৭৮৬ বর্গফুট। আর ১০০ বিঘা জমির ওপর বঙ্গবন্ধুর শস্যচিত্রটির আয়তন হবে হবে ১২ লাখ ৯২ হাজার বর্গফুট বা এক লাখ ২০ হাজার বর্গমিটার।
রেকর্ড গড়ার জন্য গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন উদ্যোক্তা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফিও পরিশোধ করা হয়েছে। গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিয়মিত আলোচনা চলছে।
আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে 'শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু'-এর ভিডিওসহ প্রয়োজনীয় দলিল গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। ১৭ মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে নতুন এই রেকর্ড অর্জন করা সম্ভব হবে বলে তাদের বিশ্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শস্যচিত্রের নকশাটি তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন উচ্চতা ও কোণ থেকে বিশেষভাবে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে। বীজতলায় সযত্নে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ প্রজাতির ধানের চারা। জমি তৈরি করা হয়েছে সেই চারা রোপনের জন্য।
- আরও পড়ুন: কৃষক কাদিরের বঙ্গবন্ধু
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের আহ্বায়ক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘গত বছরের মাঝামাঝি থেকে এর পরিকল্পনা শুরু হলেও ধান বপন ও চারা রোপনের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। লে আউট তৈরির কাজে সহযোগিতা করেছে ১০০ বিএনসিসি ক্যাডেট।’
তিনি বলেন, ’চারা থেকে হবে গাছ, তারপর ধান। আর প্রতিটি ধাপেই তৈরি হবে জাতির পিতার একেক ধরনের পোট্রেট।’
এই কার্যক্রমে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার গ্রুপ। আর প্রকল্পের ভাবনা থেকে শুরু করে, ডিজাইন ও কারিগরি বিষয়গুলোর তত্ত্বাবধানে আছেন এক্সপ্রেসিভ কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের ক্রিয়েটিভ হেড আশেক-এ-ইলাহী অনি, ওমর শরীফ ও আহমেদ জামান সঞ্জীব।