বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিষমুক্ত সবজির আলাদা বাজার চান কৃষকরা

  •    
  • ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১২:৩৯

বিষমুক্ত সবজির আলাদা বাজার প্রয়োজন বলে মনে করেন কৃষক আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, দাউদকান্দিতে বিষমুক্ত ফসলের বাজার তৈরি হলে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হবেন। সাধারণ মানুষ জানতে পারবে কোথায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন ও বিক্রি করা হয়। সে ক্ষেত্রে ফড়িয়া বা দালালরা কৃষকদের ঠকাতে পারবে না।

বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে মডেল হয়ে উঠেছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে বিষমুক্ত সবজির সমারোহ। তবে ফড়িয়া বা দালালদের ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।

এ সমস্যা নিরসনে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি বিক্রির আলাদা বাজার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

পাইলট প্রকল্প হিসেবে দুই বিভাগের (চট্টগ্রাম ও সিলেট) একমাত্র ইউনিয়ন হিসেবে দাউদকান্দিতে বিষমুক্ত সবজি চাষের জন্য বাছাই করা হয়েছে। এখানে সবজি উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টন। ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের টামটা, বিটমান, বাশরা, ভিকতলা, নয়াকান্দি গ্রামের মাঠে চাষিরা পোকা-মাকড় দমনে নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারোয়ার জামান জানান, দেশে এমন ১০ ইউনিয়নে বিষমুক্ত সবজির চাষ করা হচ্ছে।

কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ব্যবহারে তৈরি হচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। দূষিত হচ্ছে মাটি, পানি ও বাতাস। নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। এসব সমস্যা থেকে কৃষক ও পরিবেশকে বাঁচাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) প্রকল্পের আওতায় মডেল প্রকল্প হিসেবে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষ করা হচ্ছে।

প্রকল্পের অধীন দেশের ১০ উপজেলায় আইপিএম মডেল ইউনিয়ন গঠন করা হয়। প্রতিটি আইপিএম মডেল ইউনিয়নের ২৫টি দল রয়েছে। এতে আট নারীসহ ২০ জন সদস্য রয়েছেন।

কিষাণ-কিষাণীদের সমন্বয়ে ৫০০ জনের দল গঠন করা হয়েছে। ১০০ একর জমিতে তারা জৈব কৃষি ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে সবজি উৎপাদন করছেন। সবজির মধ্যে রয়েছে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, খিরা, লাউ ও স্কোয়াশ।

জমিতে নিরাপদ সবজি উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা। জমিতে লাগানো হয়েছে সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ ও নেট হাউজ।

এসব ক্ষেতে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট। ক্ষতিকর পোকা-মাকড় দমনের জন্য রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে জৈব বালাইনাশক। সবজির ভাইরাসবাহিত রোগ দমনে এখানে ১০টি নেট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে।

নয়াকান্দি গ্রামের আলমগীর বলেন, তিনি ১০০ শতাংশ জমিতে টমেটো ও খিরা চাষ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে মাঠে ফসল পরিপক্ব হবে। তারপরই তারা উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

বিষমুক্ত সবজির আলাদা বাজার প্রয়োজন বলে মনে করেন কৃষক আবদুল বাতেন। তিনি বলেন, দাউদকান্দিতে বিষমুক্ত ফসলের বাজার তৈরি হলে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হবেন। সাধারণ মানুষ জানতে পারবে কোথায় বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন ও বিক্রি করা হয়। তাহলে ফড়িয়া বা দালালরা কৃষকদের ঠকাতে পারবে না।

দাউদকান্দি উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ জামান বলেন, বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ, সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ, জৈব বালাইনাশক ও টাকা দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। পাশাপাশি কীভাবে এসব ব্যবহার করা হবে সে জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।

বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন বিষয়ে দাউদকান্দির কেন্দ্রীয় আইপিএম ক্লাবের সভাপতি কৃষি সংগঠক মতিন সৈকত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে ২০ বছর আগে থেকে আন্দোলন শুরু করেছি। উপজেলায় আইপিএমের ১৬০টি সংগঠন রয়েছে। বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে সরকার যে প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে, তা যুগান্তকারী।’

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক শহিদুল হক বলেন, ‘আইপিএম পদ্ধতিতে সবজি চাষে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নকে গড়ে তোলা হবে। নিরাপদ সবজি বিক্রির আলাদা বাজার স্থাপনের দাবি জানিয়েছে কৃষকরা। ভালো দাম না পেলে তারা এই পদ্ধতিতে আগ্রহী হবে না।

‘এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। আমরা স্থানীয়ভাবে মহাসড়কের পাশে শেড করে দেয়ার পরিকল্পনা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর